—প্রতীকী ছবি।
পাঁচ রাজ্যে বিজেপির পরাজয়ে কৃষকের ক্ষোভ বড় ভূমিকা নিয়েছে এবং তারও আগে কৃষকের সেই ক্ষোভকে প্রতিবাদের চেহারা দিতে বড় ভূমিকা ছিল মহারাষ্ট্রের ‘লং মার্চে’র। মহারাষ্ট্র হোক বা বাংলা, কৃষক ও ক্ষেতমজুরদের পাশে থাকার বার্তা দিতে মরাঠি ‘লং মার্চে’র প্রধান উদ্যোক্তা অশোক ধওয়লেকে শিলিগুড়িতে নিয়ে আসছে সিপিএম। ‘উত্তরকন্যা অভিযানে’ আসা কৃষক এবং ক্ষেতমজুরদের জন্য শিলিগুড়ি ও আশেপাশের এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে রুটি চেয়ে নেওয়ার পুরনো কায়দাতেও ফেরত যাচ্ছে তারা!
বর্ষশেষের সপ্তাহে পরপর দু’দফায় ‘উত্তরকন্যা অভিযানে’র কর্মসূচি নিয়েছে সিপিএম। প্রথমটা ২৭ ডিসেম্বর কৃষক ও কৃষি-শ্রমিকদের নিয়ে। আর পরেরটা ৩০ ডিসেম্বর শ্রমিক, কর্মচারী ও শিক্ষকদের নিয়ে। উত্তরবঙ্গের নানা জেলার গ্রাম-গঞ্জ এবং চা-বাগান ঘুরে এখন ২৭শে-র প্রস্তুতি তুঙ্গে। দলের কৃষক সভার সর্বভারতীয় সভাপতি ধওয়লেকে সামনে রেখে সে দিন দাগাপুর চা-বাগান থেকে উত্তরকন্যার দিকে পদযাত্রা এগোনোর কথা। তবে রবিবার পর্যন্ত পুলিশ ওই মিছিলের অনুমতি দেয়নি। ক্ষেতমজুর সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক অমিয় পাত্রের হুঁশিয়ারি, ‘‘পদযাত্রা শুরুর আগে জমায়েতের জায়গা পাল্টাতে পারে। কিন্তু পুলিশ অনুমতি না দিলেও সে দিন পদযাত্রা হবেই!’’
সিঙ্গুর থেকে রাজভবন পর্যন্ত সাম্প্রতিক পদযাত্রায় ভাল সাড়া পাওয়ার পরেই উত্তরবঙ্গে আরও উৎসাহ নিয়ে অভিযানের প্রস্তুতিতে নেমেছে সিপিএম। বাড়ি বাড়ি গিয়ে রুটি সংগ্রহ করে কৃষক, ক্ষেতমজুরদের দাবির প্রতি সাধারণ মানুষের সহমর্মিতা আদায়ের কৌশল নেওয়া হয়েছে। যা অতীতে কমিউনিস্ট পার্টি করত। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘মহারাষ্ট্রের কিষান লং মার্চ সারা দেশের কৃষক আন্দোলনকে পথ দেখিয়েছে। তাই অশোক ধওয়লেকে আমরা শিলিগুড়িতে এনে কৃষক, ক্ষেতমজুরদের লড়াইকে আরও সংহত করতে চাই।’’ দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ধওয়েলেও জানিয়েছেন, কেন্দ্রে বা কোনও রাজ্যে যে সরকারই থাক, কৃষকদের দাবি আদায়ের জন্য নিরবচ্ছিন্ন লড়াইয়ে তাঁরা আছেন। কৃষক সভার রাজ্য সম্পাদক অমল হালদার, তুষার ঘোষ, ক্ষেতমজুর সংগঠনের অমিয়বাবুরাও শিলিগুড়ি যাচ্ছেন।
তৃণমূলের তরফে অবশ্য পাল্টা বলা হচ্ছে, সিপিএম হইচই করলেও মহারাষ্ট্র আর বাংলার পরিস্থিতি এক নয়। চলতি অর্থবর্ষেই সমবায়ের মাধ্যমে ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা কৃষিঋণ দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঋণ শোধ করলে ৩% সুদ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। আর টুইটে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘রাজ্যে কৃষকদের গড় বার্ষিক আয় ২০১০-১১ সালের ৯১ হাজার টাকা থেকে তিন গুণ বেড়ে ২০১৭-১৮ সালে ২ লক্ষ ৯১ হাজার টাকা হয়েছে। আমরা কৃষিজমির খাজনাও মকুব করেছি।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র আবার কৃষকদের তিন গুণ আয় বাড়ার দাবি নস্যাৎ করে দিচ্ছেন!