মুজফফর আহমেদের ( কাকাবাবু) জন্মদিবস উপলক্ষে সভায় বিমান বসু ও সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। —নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে ফের কোণঠাসা হয়েছে বামপন্থীরা। এই পরিস্থিতিতে জনসংযোগ বাড়িয়ে এবং বাম, গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে এগোনোর বার্তা উঠে এল মুজফ্ফর আহমেদের (কাকাবাবু) ১৩৬তম জন্মদিনে।
মহাজাতি সদনে সোমবার কাকাবাবুর জন্মদিন উপলক্ষে সভায় প্রবীণ সিপিএম নেতা বিমান বসু মনে করিয়ে দিয়েছেন, শুধু সংগঠিত সভা-সমাবেশ করলেই চলবে না। মানুষের সঙ্গে যেগাযোগ আরও বাড়াতে হবে। বিমানবাবুর কথায়, ‘‘নিবিড় জনসংযোগের লক্ষ্যে পথ চলতে না-পারলে পারলে বর্তমান পরিস্থিতি পরিবর্তন সম্ভব নয়। এটা নতুন প্রজন্মকে ভাবতে হবে।’’ দেশ ও রাজ্যের পরিস্থিতির প্রকৃত প্রতিফলন ভোটের ফলে পড়েনি বলে দাবি করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁর অভিযোগ, ‘‘মানুষের মতকে লুট করা হয়েছে কৃত্রিম বিভাজন ছড়িয়ে। ইভিএমের ফলাফল এবং মানুষের যন্ত্রণা এক জায়গায় আসেনি। অর্থ, প্রচারমাধ্যম, পেশিশক্তি ও ব্যবস্থাপনার সাহায্যে এবং রাষ্ট্রশক্তিকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। অসম লড়াই হলেও আমাদের সামনে অন্য কোনও শর্ট-কাট রাস্তা নেই। কাকাবাবুদের জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে মতাদর্শে অবিচল থেকে মানুষের কাছে যেতে হবে, খেটে খাওয়া মানুষকে সংগঠিত করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’’ সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্রের মতে, কেউ কেউ ভাবছেন বিজেপিকে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস বা তৃণমূলকে দিয়ে বিজেপিকে হারানো যাবে। কিন্তু সেটা হওয়ার নয়। বামেরা বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারছে না, তা মেনে নিয়েই সূর্যকান্তের আহ্বান, ‘‘যারা কোনও পার্টি করেন না, অথচ বামপন্থী-মনস্ক, তাঁদের সংগঠিত করার প্রয়োজন। এ রাজ্যেও শুধু বামপন্থীদের নিয়ে হবে না। বাম, গণতান্ত্রিক শক্তিকে এক জায়গায় আনতে হবে।’’
বাংলাদেশের পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এ দিনের সভায় সিপিএমের সব বক্তাই বলেছেন, স্থিতিশীল, ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ প্রয়োজন এ দেশের স্বার্থে। প্রসঙ্গত, কাকাবাবুর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এসে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের স্ত্রী স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায় প্রয়াত লেখকের বইয়ের সম্ভার আনুষ্ঠানিক ভাবে সিপিএমের কাছে হস্তান্তর করেছেন।