প্রতীকী ছবি।
নিজের ভাবনায় দল স্লোগান তৈরি করে নেবে, এ বার সেই রেওয়াজের বাইরে বেরোচ্ছে সিপিএম। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশের জন্য আম জনতার কাছ থেকেই স্লোগান এবং প্রচারের বিষয় চাইছে তারা। লোকসভা নির্বাচনের ইস্তাহার তৈরির আগে কংগ্রেসে রাহুল গাঁধী যেমন জনমত সংগ্রহ করার বন্দোবস্ত করেছেন, আলিমুদ্দিনের ব্রিগেড-ভাবনাও অনেকটা সে রকম।
দুর্দিনের বাজারে সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগসূত্র বেঁধে নেওয়ার লক্ষ্যেই এ বারের বাম সমাবেশের নাম দেওয়া হচ্ছে ‘পিপল্স ব্রিগেড’। দেওয়ালে লিখে বা পোস্টার-ফেস্টুন দিয়ে সাবেক প্রচারের চেয়েও এখন যুগের ধর্ম মেনেই সব দলের নজর সামাজিক মাধ্যমে। সেই মাধ্যমকে কাজে লাগিয়েই আম জনতার কাছ থেকে ব্রিগেডের জন্য পোস্টার, গ্রাফিক্স, কবিতা চাইছে সিপিএম রাজ্য কমিটির সোশ্যাল মিডিয়া ইউনিট। নির্দিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর বা সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্টে মেসেজ করে যে কেউ পাঠাতে পারবেন তাঁদের ভাবনা। দলীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, যেমন যেমন সাড়া পাওয়া যাবে, সেই মতোই জনতার অবদান ব্রিগেডের আগে থেকেই তুলে ধরা হবে।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি বা দুর্নীতির প্রতিবাদের যে মূল সুরে ব্রিগেড সমাবেশের আয়োজন, দলের নিজস্ব আয়োজনের প্রচারে সে সব তো থাকবেই। এ ছাড়াও নানা এলাকার মানুষের নানা দাবি থাকে। যেগুলো নিয়ে বিরোধীরা সরব হোক বলে তাঁরা মনে করেন। সেই জন্যই সাধারণ মানুষের কাছেই তাঁদের মতামত চাওয়া হচ্ছে।’’ তবে বাম সমর্থকদের বাইরে অন্যান্যেরা সরসারি কোনও রাজনৈতিক দলের প্রচারে নাম জড়াতে যে না-ও চাইতে পারেন, সেই ব্যাপারে আলিমুদ্দিন অবহিত। ওই রাজ্য নেতার বক্তব্য, ‘‘যাঁরা চাইবেন, তাঁদের নাম দিয়েই তাঁদের পাঠানো বিষয়বস্তু ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব চ্যানেলে ব্যবহার করা হবে। যাঁরা নামপ্রকাশ করতে চান না বলে জানাবেন, তাঁদের নাম গোপনই রাখা হবে।’’
এর আগে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় ইস্তাহার কমিটির চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম কলকাতায় এসেও জনমতের আসরে তাঁদের দলের ইস্তাহার সম্পর্কে প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছেন। প্রস্তাবকদের নাম ও পেশা তাঁরা জেনে নিয়েই খসড়া নোট তৈরি করেছেন। তবে জনমত নেওয়ার আসরে অংশগ্রহণকারীদের নামধাম কংগ্রেস তার নিজস্ব তথ্যভাণ্ডারেই রেখে দেবে।
শুধু পোস্টার, কবিতা বা গ্রাফিক্সই নয়, সিপিএম অবশ্য ব্রিগেডের আগে ভিডিয়ো ক্লিপও চাইছে। দলের রাজ্য কমিটির এক সদস্য বলছেন, ‘‘কোনও ঘটনার ছবি দিয়ে কিছু বক্তব্য বা কোনও ব্যক্তি কেন ব্রিগে়ডে আসবেন, সেই কথা কিংবা পুরনো কোনও ব্রিগেডে়র স্মৃতি— এক মিনিটের এই রকম কোনও ভিডিয়ো ক্লিপ আমরা চাইছি। সেগুলো ‘টিজ়ার’ হিসেবে কাজে লাগানো হবে।’’
এ সবে আমল না দিয়ে তৃণমূল শিবির অবশ্য প্রশ্ন তুলছে, ‘‘ওদের এত আয়োজনের পরেও ভোটের বরাতে হেরফের হবে কি?’’