ফের সশস্ত্র হামলা বিরোধী বিধায়কের উপরে। এ বারেও অভিযোগ শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
পথসভা চলাকালীন সিপিএম বিধায়ককে মারধর এবং আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে তাড়া করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকালে সন্দেশখালির খুলনাতে সিপিএমের পথসভায় তৃণমূলের লোকজন গুলি-বোমা ছুড়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এর পরেই দু’পক্ষের মধ্যে গণ্ডগোল বাধে। এতে দু’পক্ষের দশ জন আহত হয়েছেন। তার মধ্যেই আহত হন এলাকার বিধায়ক নিরাপদ সর্দার। নিরাপদবাবুর অভিযোগ, এ সব কিছুই পুলিশের সামনে ঘটেছে। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ২৫ জুলাই এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে সন্দেশখালি থানায় অবস্থান-বিক্ষোভ দেখানোর কথা বামেদের। তার প্রচারে এ দিন নিরাপদবাবুর নেতৃত্বে সিপিএম সমর্থকেরা সন্দেশখালিতে একটি মিছিল বের করে। সকাল ১০টা নাগাদ ওই মিছিল পৌঁছয় খুলনা বাজারে। সেখানেই সিপিএমের পথসভা শুরু হয়।
এরই পাশাপাশি ২১ জুলাই উপলক্ষে এলাকার তৃণমূল নেতা উত্তম সর্দার, রণজিৎ দাসের নেতৃত্ব একটি মিছিল বের করা হয়। সিপিএমের সভার সামনে দিয়ে তৃণমূলের মিছিল যাওয়ার সময়ে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে। বাঁশ, লাঠি নিয়ে শুরু হয় মারামারি। নিরাপদবাবুর হাত থেকে মাইক কেড়ে নিয়ে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ভেঙে ফেলা হয় অস্থায়ী মঞ্চটিও। সিপিএমের ফ্ল্যাগ-ফেস্টুন ফেলে দেওয়া হয় নদীতে। এর পরেই তৃণমূল সমর্থকেরা শূন্যে গুলি করে, পুলিশের সামনেই নিরাপদবাবুকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাড়া করা হয় বলে অভিযোগ। নিরাপদবাবু এবং সন্দেশখালি পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান দিলীপ মল্লিক-সহ কয়েক জন পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকে আশ্রয় নেন। অভিযোগ, শাসকদলের লোকেরা পঞ্চায়েত অফিস ঘেরাও করেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর সন্দেশখালি থানার ওসি বাহিনী নিয়ে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। নিরাপদবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূলের লোকজন হঠাৎ গুলি-বোমা ছুড়তে ছুড়তে আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমাদের মিছিলে গ্রামের মানুষের ভিড় দেখে হামলা চালায়। ওদের লাঠির ঘায়ে আমার হাত কেটে গিয়েছে।’’
কিন্তু এই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল সাংসদ ইদ্রিশ আলি বলেন, ‘‘এই অভিযোগ মিথ্যা। বিধায়কের নেতৃত্বে সিপিএম সমর্থকেরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নামে কুৎসা করছিলেন। তা শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রতিবাদ করেন। ওই সময়ে সিপিএম আমাদের মিছিলের উপর হামলা চালায়। হামলায় আমাদের কয়েক জন আহতও হয়েছে। এতে জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে বিধায়ককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায়। এখন নিজেদের অপরাধ ঢাকতে এবং এলাকাতে উত্তেজনা ছড়াতে আমাদের নামে মিথ্য অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’