নির্বাচনে জিতে বোর্ড গঠনের পর থেকে তিন বছর ধরে শিলিগুড়ি পুরসভায় রাজ্য সরকার অর্থনৈতিক অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে বলে রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানাল বামেরা। তাদের অভিযোগ, রাজ্যের কাছ থেকে প্রাপ্য টাকা তো মিলছেই না। এমনকী, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা তারা আটকে রেখেছে। সাংসদ তহবিলের অনুদানেও ছাড়পত্র দিতে অস্বীকার করা হচ্ছে!
শিলিগুড়ির প্রতি আর্থিক বঞ্চনা নিয়ে এর আগে দফায় দফায় দরবার হয়েছে পুরমন্ত্রীর কাছে। বিধানসভাতেও বিষয়টি তোলা হয়েছে। কিন্তু রাজ্যে বিরোধীদের হাতে থাকা একমাত্র পুর-নিগমের প্রতি অন্যায় নিয়ে দলের রাজ্য নেতৃত্ব কেন সে ভাবে সরব নন, সেই প্রশ্ন উঠেছিল সম্প্রতি সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্মেলনে। তার পরেই বৃহস্পতিবার দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর দুই সদস্য সুজন চক্রবর্তী ও অশোক ভট্টাচার্য শিলিগুড়ির বাম কাউন্সিলরদের নিয়ে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। রাজ্যপালকে শিলিগুড়ির মেয়র অশোকবাবু হিসাব দিয়ে দেখিয়েছেন, কেন্দ্রের ৯০০ ও রাজ্যের ৩০০ কোটি মিলে শুধু প্রকল্প খাতে শিলিগুড়ি পুরসভার ১২০০ কোটি টাকা পাওনা আটকে রয়েছে। ডেঙ্গির মতো রোগ মোকাবিলায় সব পুরসভা সরকারি অনুদান পেলেও শিলিগুড়ি পায়নি। এক সাংসদকে জেলাশাসক চিঠি দিয়ে বরাদ্দ বাতিল করতে বলেছেন বলেও বামেদের অভিযোগ!
রাজভবন থেকে বেরিয়ে অশোকবাবু বলেন, ‘‘একমাত্র অপরাধ, শিলিগুড়ির পুরসভা, মহকুমা পরিষদ ও বিধানসভা আসন বামেরা জিতেছে! এ ছাড়া এই আচরণের অন্য কোনও কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজনবাবুর মন্তব্য, ‘‘রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা ছাড়া কোনও কিছুই হয় না! এই অসাংবিধানিক কাজও ওঁর অগোচরে নিশ্চয়ই হচ্ছে না।’’ গণতান্ত্রিক পথে দরবার করে কোনও কাজ না হলে আদালতের দ্বারস্থ হওয়া শেষ রাস্তা বলে তাঁরা জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, রাজ্যপাল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি খোঁজ নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।