ফাইল চিত্র।
দলীয় শৃঙ্খলা ভাঙার অভিযোগে দলের প্রয়াত প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের দিকেই যাচ্ছে সিপিএম। অজন্তার আচরণকে ‘ছোট করে দেখা যায় না’ বলে মন্তব্য করে রবিবার সেই ইঙ্গিতই দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। অধ্যাপক অজন্তা দলের যে ইউনিটের যে সদস্য, তারাই দলীয় গঠনতন্ত্র মেনে চার্জশিট দেবে। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও অজন্তা পাবেন।
তৃণমূলের দলীয় মুখপত্রে অনিল-কন্যার কলম ধরার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন শুরু হয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’র বিষয়ে চার কিস্তির লেখার শেষ পর্বে অজন্তার কলমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশস্তিও এসেছে। এক কালে বঙ্গ সিপিএমের শেষ কথা যিনি ছিলেন, আবার দলই ছিল যাঁর কাছে শেষ কথা, সেই অনিলবাবুর কন্যা কী ভাবে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের মুখপত্রে লিখতে রাজি হয়ে গেলেন, তা ভেবে বিস্মিত হয়েছিলেন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নেতৃত্ব। বিমান বসু-সহ একাধিক নেতা এর মধ্যে অজন্তার সঙ্গে কথা বলেছেন কিন্তু তাঁর মন পরিবর্তনের কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। গোটা ঘটনা বিমানবাবুদের স্তম্ভিত করেছে।
এই পরিস্থিতিতেই প্রশ্নের জবাবে এ দিন দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবু বলেছেন, ‘‘বিষয়টা আমরা শুনেছি। অজন্তা যা করেছেন, তা কোনও ভাবেই ছোট করে দেখা যায় না। অজন্তা একটি ইউনিটের সদস্য। যা পদক্ষেপ করার আগে ইউনিট করবে। তার পরে কলকাতা জেলা কমিটি রয়েছে। তার পরে আমরা।’’ সূর্যবাবুর আরও বক্তব্য, ‘‘ওঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে। তবে উনি যা করেছেন, তা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’’ সংশ্লিষ্ট ইউনিট ইতিমধ্যেই অজন্তাকে কারণ দর্শাতে বলে চিঠি দিয়েছে।
সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য, দলের সদস্য হয়ে প্রতিপক্ষ অন্য দলের রাজনৈতিক মুখপত্রে লেখা গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলা লঙ্ঘন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে বিষয়টাকে অন্য ভাবে নেওয়া যায় না। অজন্তার পক্ষে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য টুইটে সিপিএম নেতাদের আক্রমণ করেছেন। সিপিএম ছেড়ে আসা, অধুনা তৃণমূল নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু বলেছেন, ‘‘দলের কিছু নিয়ম, শৃঙ্খলা অবশ্যই আছে। আমিও ওই দলটা করার সময়ে ময়দান করতে গিয়ে (ক্লাব ও খেলা সংক্রান্ত ভূমিকা) শো-কজ়ের মুখে পড়েছিলাম। যাঁরা স্বাধীন ভাবে ভাবতে চান, কিছু করতে চান, তাঁদের সমস্যা হয়।’’
আলিমুদ্দিনে এ দিনই প্রাক্তন উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী ও দলের রাজ্য কমিটির সদস্য সুদর্শন রায়চৌধুরীর মরদেহে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিমানবাবু, সূর্যবাবু, মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী, রবীন দেবেরা। তার পরে দেহ দান করা হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালের অ্যানাটমি বিভাগে।