বামেদের কৃষক সমাবেশ। সভা স্থলে (বাঁ দিকে) ও সমাবেশের পথে (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা ভোটের আগে জোর টক্কর চলছে রাজ্য ও কেন্দ্রের দুই শাসক দল তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে। উত্তপ্ত হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। এই আবহের মধ্যেই কৃষক সংগঠনগুলিকে সামনে রেখে শহরে শক্তি প্রদর্শন করল বামেরা। কেন্দ্রের কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে বামেদের কৃষক সমাবেশে ভিড় হল চোখে পড়ার মতো। গরুর গাড়ি সঙ্গে নিয়ে রাজভবনে দাবিপত্র দিয়ে এলেন কৃষক নেতারা। জেলায় জেলায় ডাক দেওয়া হল কৃষক জাঠার।
কৃষক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ ‘কৃষক সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি’র ডাকে বুধবার ছিল ‘রাজভবন চলো’ অভিযান এবং রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশ। শিয়ালদহ ও হাওড়া থেকে যে দু’টি মিছিল এ দিন ধর্মতলায় এসেছিল, তাদের কলেবর এবং বর্ণাঢ্য চেহারা বাম নেতাদের উৎসাহ বাড়িয়েছে। আইএনটিইউসি-সহ শ্রমিক সংগঠনগুলিও সংহতি জানাতে মিছিল করে সমাবেশে যোগ দিয়েছিল। সমাবেশে ডাক দেওয়া হয়েছে, রাস্তায় নেমে আন্দোলন চালিয়েই নরেন্দ্র মোদী সরকারকে পিছু হঠতে বাধ্য করা হবে। কেন্দ্রীয় এই সমাবেশের পরে আগামী ২০ থেকে ৩১ ডিসেম্বর চলবে জেলায় জেলায় কৃষক জাঠা।
সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য ও কৃষক সভার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা এ দিন সমাবেশে বলেন, ‘‘কর্পোরেটের দাসত্ব করে মোদী সরকার যে তিনটি কালা আইন এনেছে, ভারতের কৃষক এবং সাধারণ জনতার আন্দোলনের জোরেই সেই আইন প্রত্যাহার করতে হবে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘‘কৃষকদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে ক্ষমতার জোরে আইন নিয়ে এসেছে মোদী সরকার। এতে কৃষকদের স্বার্থহানি হবে এবং কর্পোরেটদের লাভ হবে। আমাদের দাবি, এই আইন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।’’ কেন্দ্রীয় সরকার ও কৃষক সংগঠনগুলির মধ্যে মধ্যস্থতা করার জন্য কমিটি গড়ার যে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বক্তারা। তাঁদের দাবি, গণ-আন্দোলনে এ ভাবে হস্তক্ষেপ মানা যায় না।
আরও পড়ুন: দিদি-ফোনের পরেও সুনীলের বাড়িতে শুভেন্দুর সঙ্গে জিতেন্দ্রর বৈঠক
আরও পড়ুন: স্পিকার ডাকলে আবার এসে তাঁর হাতেই ইস্তফা দিয়ে যাবেন ‘মুক্ত’ শুভেন্দু
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণের পাশাপাশি এ রাজ্যে কেন বিধানসভা অধিবেশন ডেকে কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ এবং বিকল্প আইন তৈরির চেষ্টা হচ্ছে না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন অমল হালদার, কার্তিক পাল, সুভাষ নস্কর, অভীক সাহা, গোবিন্দ রায়েরা। সারা দেশের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে কৃষক প্রতিবাদকে আরও বড় চেহারা দেওয়ার কথা বলেছেন সব নেতাই। বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তীর মতো সিপিএমের শীর্ষ নেতারা সমাবেশে উপস্থিত থাকলেও তাঁরা কেউ বক্তৃতা করেননি।