দল ক্ষমতায় নেই। সংগঠনও ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে। মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে তাই এ বার মরিয়া চেষ্টা শুরু করে দিল সিপিএম। মাত্র বিশ দিন আগে দলীয় প্লেনামে সূর্যকান্ত মিশ্ররা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, দুর্নীতিপরায়ণদের আর স্থান দেওয়া হবে না সংগঠনে। তাতে দল ছোট হয়ে যায়, যাক। সেই মোতাবেক উত্তর ২৪ পরগনার বরাহনগর জোনাল কমিটির নেতা রঞ্জিত দাসকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিল জেলা সম্পাদকমণ্ডলী। আজ, মঙ্গলবার জেলা কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ার কথা।
বরাহনগরের এই নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন নয়। ফ্রন্ট ক্ষমতায় থাকার সময়েও বিস্তর অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। তা খতিয়ে দেখতে তখন তদন্ত কমিশন বসিয়েছিল সিপিএম। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সংগঠনের দায়িত্ব থেকে তাঁকে সরানো হয়েছিল। পরে দলীয় সম্মেলন থেকে ফের নির্বাচিত হয়ে বরাহনগর জোনাল কমিটিতে ফেরেন রঞ্জিত।
এ হেন রঞ্জিতের বিরুদ্ধে দলীয় স্তরে নতুন অভিযোগ, এলাকায় একটি দলীয় অফিস তৈরির নামে স্থানীয় প্রোমোটারের থেকে ১৫০ বর্গফুটের একটি ঘর নিয়েছেন তিনি। দ্বিতীয়ত, তাঁর জামাইয়ের বিরুদ্ধেও নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তবে তাঁর জামাইয়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে দলের একাংশের মধ্যে মতপার্থক্য আছে। তাঁদের বক্তব্য, রঞ্জিতের জামাই দলের সদস্য নন। ফলে জামাইয়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের দায় রঞ্জিতের উপর বর্তায় কী ভাবে? এই প্রশ্নও উঠেছে যে, তা হলে কি সিপিএমের গোষ্ঠী রাজনীতির শিকার হলেন রঞ্জিত? তিনি এক সময় উত্তর ২৪ পরগনার নেতা প্রয়াত অমিতাভ নন্দীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। অর্থাৎ সুভাষ চক্রবর্তীর বিরোধী গোষ্ঠীর সদস্য ছিলে। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘গোষ্ঠী রাজনীতির গল্প নেই। রঞ্জিত দাসকে আগেই বহিষ্কার করা উচিত ছিল। দলের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে এঁদের মতো লোককে তাড়ানো ছাড়া উপায়ান্তর নেই।’’
রঞ্জিত অবশ্য এ ব্যাপারে এখনই কিছু প্রতিক্রিয়া জানাতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘আমি এমন সিদ্ধান্তের কথা অনেকের মুখে শুনছি। কিন্তু দলের তরফে কোনও লিখিত বার্তা পাইনি। ফলে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’