এমন বন্ধু আর কে আছে! এই প্রশ্নই তুলছে সিপিএম এবং কংগ্রেস।
সদ্যই রামনবমীকে ঘিরে বাংলায় রেষারেষি হয়েছে বিজেপি এবং তৃণমূলের। গেরুয়া শিবিরের পরম্পরাগত কর্মসূচি এ বার নিজেরাই আনুষ্ঠানিক ভাবে পালন করেছে তৃণমূল। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি গিয়েছেন কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে অ-বিজেপি ফ্রন্ট গড়ার সলতে পাকাতে। যা আসলে বিজেপি-বিরোধী সব শক্তিকে এক জায়গায় আনার প্রয়াসে ফাটল ধরানোর চেষ্টা বলেই মনে করছেন সিপিএম ও কংগ্রেস নেতারা। তাই তাঁদের প্রশ্ন, বিজেপির জন্য তৃণমূল নেত্রীর মতো ‘বন্ধু’ আর কে আছে!
বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বোলপুরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকের উদাহরণ দিয়ে বলছেন, রাজ্য পুলিশের ডিজি বলেছিলেন রামনবমীতে সশস্ত্র মিছিলের অনুমতি দেওয়া হবে না। মুখ্যমন্ত্রীই বলেছিলেন, ১০ বছর ধরে যারা পরম্পরাগত ভাবে রামনবমী পালন করছে, তাদের ছাড় থাকবে। ওই ‘ছাড়’ ধরেই সশস্ত্র মিছিলের রাস্তা খুলেছিল। সুজনবাবু মঙ্গলবার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এখন দিল্লি গিয়েছেন রিপোর্ট কার্ড দিতে! বাংলায় কত সুন্দর রামনবমী করে এলাম। এখানে রামনবমী পালন করে বিজেপি-সঙ্ঘকে ময়দান ছেড়ে দিয়ে দিল্লি গিয়েছেন বিজেপি-বিরোধী ফ্রন্ট করতে। টিআরএসের মতো দলের সঙ্গে বিজেপির রসায়ন কেউ জানে না? বিজেপি-বিরোধী শক্তির মধ্যে বিভাজন ধরিয়ে বিজেপিকে সাহায্য করাই ওঁর উদ্দেশ্য।’’
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও বলছেন, ‘‘তৃণমূলও রাম রাম করছে! তৃণমূল আর বিজেপির স্লোগানে এখন ফারাক খোঁজা মুশকিল।’’ অধীরবাবুর মতে, ‘‘তৃতীয় বা ফে়ডেরাল ফ্রন্ট সোনার পাথরবাটি! মুখ্যমন্ত্রী যা করছেন, তাতে বিজেপিরই উপকার হচ্ছে।’’ বাংলায় এক দিকে তীব্র মেরুকরণের পরিস্থিতি তৈরি করে এবং জাতীয় রাজনীতিতে রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসকে বাইরে রেখে ফ্রন্ট গড়তে চেয়ে তৃণমূল নেত্রী বিজেপি-কেই তলে তলে সহায়তা করছেন বলে মনে করছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
কেন্দ্রে বিজেপি এবং রাজ্যে তৃণমূলের তুলনা টেনে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির মন্তব্য, ‘‘প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতা বাংলাকে এই অবস্থায় এনেছে। দু’টো দলের কর্মসূচি অভিন্ন— মেরুকরণ, ঘৃণা এবং সন্ত্রাস। এই কর্মসূচিতে তারা একে অপরের উপরে নির্ভরশীল।’’