শনিবার বিকেলে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে ধর্মতলায়। ভাঙড়ের রেশ এসে পৌঁছয় শহরের প্রাণকেন্দ্রে। ছবি: পিটিআই।
ধর্মতলায় পুলিশ এবং আইএসএফ কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধে আহত হয়েছেন দু’পক্ষেরই অনেকে। শনিবার বিকেলের ওই ঘটনার পর সন্ধ্যা সেখানে য়ান কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। পুলিশকে বিনা প্ররোচনায় আক্রমণ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ওখানে ওঁদের বসতে বারণ করা হয়েছিল। তুলতে গেলে আমাদের উপরেই আক্রমণ চালানো হয়।’’
কমিশনারের দাবি, পুলিশকে আক্রমণ করেছেন আইএসএফের কর্মী-সমর্থকরাই। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে এবং আত্মরক্ষার জন্যই পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলে দাবি তাঁর। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় ভাঙড়ের বিধায়ক তথা আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকি-সহ মোট সতেরো জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সিপি জানিয়েছেন এই ঘটনায় পনেরো জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন।আহতদের মধ্যে রয়েছেন, ডিসি সেন্ট্রাল, ডিসি সেন্ট্রাল-২, ডিসি সাউথ, বৌবাজার থানা এবং হেয়ার স্ট্রিট থানার আইসিও। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, আইএসএফের কিছু কর্মী-সমর্থক শনিবার দুপুরের দিকে ডোরিনা ক্রসিংয়ের উপর বসে পড়েন। ব্যস্ত রাস্তায় যান চলাচল অবরুদ্ধ হওয়ার কথা জানিয়ে অবরোধকারীদের উঠে যাওয়ার অনুরোধ জানায় পুলিশ। কিন্তু পুলিশের ‘অনুরোধ’ অমান্য করে হঠাৎই মারমুখী হয়ে ওঠেন আইএসএফের কর্মী-সমর্থকেরা। পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল, পাটকেল ছোড়া শুরু হয়ে যায়। বিনীত বলেন, “আমরা ধৈর্য ধরে ছিলাম। কিন্তু আমাদের পুলিশ আধিকারিককে ওঁরা মারতে শুরু করেন। বাধ্য হয়েই কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করলাম। মৃদু লাঠিচার্জও করা হয়েছে।” এই ঘটনায় ভাঙচুর চালানো এবং পুলিশকে নিগ্রহ করায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার বিকেলে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে ধর্মতলায়। ভাঙড়ের রেশ এসে পৌঁছয় শহরের প্রাণকেন্দ্রে। যার জেরে স্তব্ধ হয়ে যায় মধ্য কলকাতার যান চলাচল। ভাঙড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন আইএসএফের কর্মীরা। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী, শনিবার কলকাতায় সভা ছিল আইএসএফের। দলের কর্মীরা বিক্ষোভ দেখানোর পর তাঁদের উপর ব্যাপক লাঠিচার্জ করার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। কার্যত টেনেহিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয় ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে। পাল্টা পুলিশকে আক্রমণ করার অভিযোগ ওঠে নওশাদের দলের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। উন্মত্ত জনতাকে থামাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। পাল্টা বাঁশ, লাঠি নিয়ে পুলিশকে তাড়া করেন আইএসএফের কর্মীরা।