নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর ফাইল চিত্র।
রাজ্যে করোনার দ্বিতীয় টিকা পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে জেলায় জেলায়। আবার রাজ্য সরকার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বলছে, তাদের চাহিদা অনুযায়ী টিকা পাঠাচ্ছে না কেন্দ্র। তাই টিকা দিতে সমস্যা হচ্ছে। এই অবস্থায় স্বাস্থ্য ভবন জানিয়ে দিল, রাজ্যে কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন নিয়ে মোট ৮ লক্ষ ৪৩ হাজার ৮৪৭ জন দ্বিতীয় টিকা পাননি। এই অবস্থায় স্বাস্থ্য ভবন নির্দেশ দিয়েছে, এখন থেকে রাজ্যে যে পরিমাণ টিকা আসবে তার ৫০ শতাংশ বরাদ্দ থাকবে শুধুমাত্র দ্বিতীয় টিকা হিসাবে। অর্থাৎ যাঁদের দ্বিতীয় টিকা বাকি তাঁদের দেওয়া হবে সেই টিকা।
কোভিশিল্ডের দু’টি টিকার মধ্যে ব্যবধান ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ করেছে কেন্দ্র। অন্য দিকে কোভ্যাক্সিনের দু’টি টিকার মধ্যে ব্যবধান ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ। স্বাস্থ্য ভবন জানিয়েছে, রাজ্যে ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহের মধ্যে কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় টিকা বাকি রয়েছে ৪ লক্ষ ৭৯ হাজার ৪৬২ জনের। ১৬ সপ্তাহের উপর দ্বিতীয় টিকা বাকি রয়েছে ২ লক্ষ ২২৩ জনের। অর্থাৎ রাজ্যে কোভিশিল্ডের মোট দ্বিতীয় টিকা বাকি রয়েছে ৬ লক্ষ ৭৯ হাজার ৬৮৫ জনের।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
অন্য দিকে রাজ্যে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে কোভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় টিকা বাকি রয়েছে ১ লক্ষ ৫২ হাজার ১৬০ জনের। ৬ সপ্তাহের উপর দ্বিতীয় টিকা বাকি রয়েছে ১ লক্ষ ৫২ হাজার ১৬০ জনের। অর্থাৎ রাজ্যে কোভ্যাক্সিনের মোট দ্বিতীয় টিকা বাকি রয়েছে ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ১৬২ জনের।
স্বাস্থ্য ভবন আরও জানিয়েছে, ১ এপ্রিল থেকে ৭ মে পর্যন্ত যাঁরা প্রথম টিকা নিয়েছেন তাঁদের দ্বিতীয় টিকা নেওয়ার সময় হবে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে। অর্থাৎ ৩১ জুলাই দ্বিতীয় টিকা প্রাপকের সংখ্যাটা দাঁড়াবে ৩৭ লক্ষ ৯৩ হাজার ৬৪০ জন।
স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য দফতরের তরফে কলকাতা পুরসভার কমিশনার, সব জেলাশাসক, জেলা হাসপাতালের অধ্যক্ষ ও সুপার এবং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাঁদের দ্বিতীয় টিকা নেওয়া বাকি, তাঁদের অবিলম্বে টিকা দিতে হবে। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এখন থেকে রাজ্যের হাতে যে টিকা থাকবে তার ৫০ শতাংশ শুধুমাত্র দ্বিতীয় টিকা হিসাবে ব্যবহার হবে। অর্থাৎ প্রতি দিন যে পরিমাণ টিকা দেওয়া হবে তার অর্ধেক হবে দ্বিতীয় টিকা।
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, যে ৬টি জেলায় দ্বিতীয় টিকা সবথেকে বেশি বাকি সেই জেলাগুলি হল কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, মুর্শিদাবাদ এবং মালদা। তার মধ্যে কলকাতায় ৫৮ হাজার ৪২৮ জনের কোভিশিল্ড ও ২৫ হাজার ২১ জনের কোভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় টিকা বাকি রয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৫৬ হাজার ৭৭৪ জনের কোভিশিল্ড ও ৫ হাজার ৮৯৫ জনের কোভ্যাক্সিন, উত্তর ২৪ পরগনায় ৪৩ হাজার ৮৭৬ জনের কোভিশিল্ড ও ১৮ হাজার ১৭৯ জনের কোভ্যাক্সিন, মুর্শিদাবাদে ৪৮ হাজার ৬১৪ জনের কোভিশিল্ড ও ১০ হাজার ১৯৩ জনের কোভ্যাক্সিন, হুগলিতে ৩৯ হাজার ৭০৪ জনের কোভিশিল্ড ও ৪ হাজার ৯৩৩ জনের কোভ্যাক্সিন এবং মালদহে ৩৫ হাজার ৬৬০ জনের কোভিশিল্ড ও ১৫ হাজার ৯৭৬ জনের কোভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় টিকা বাকি রয়েছে।