প্রতীকী ছবি।
পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট কোভোভ্যাক্স নামে যে প্রতিষেধক বানাচ্ছে, তা শিশুদের জন্য উপযোগী এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই তা অনুমোদন পাবে বলে দাবি করছেন সিরাম-অধিকর্তা আদার পুনাওয়ালা। বৃহস্পতিবার টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।
ভারতে ১০০ কোটি কোভিড প্রতিষেধক ডোজ় প্রদান সম্পূর্ণ হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সেটি বিপুল ভাবে উদ্যাপিতও হচ্ছে। তারই মধ্যে অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারতে ব্যবহৃত অন্যতম প্রতিষেধক কোভিশিল্ড নির্মাতা সিরাম ইনস্টিটিউট এ বার কোভোভ্যাক্স-এ মনোনিবেশ করেছে। ১০০ কোটির মাইলফলক ছোঁয়ার কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দিয়ে আদার আজ বলেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে কোভোভ্যাক্স-এর তথ্য জমা দিয়েছি। দু’তিন বছরের শিশুদেরও এই টিকা দেওয়া যাবে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ ব্যাপারে অনুমোদন এসে যাওয়ার কথা।’’ সেই সঙ্গে তিনি জানান, কোভোভ্যাক্স-এর এক মাসেরও বেশি স্টক এখনই মজুত আছে। ভায়ালে প্রতিষেধক ভরা এবং প্যাকেজ করার জন্য তাঁরা বেশ কিছু অন্য সংস্থার সঙ্গেও কথা বলছেন। ‘‘এই কাজটা অন্য অনেকেই করতে পারে। বায়োকনেও হতে পারে, আমাদের কারখানাতেও হতে পারে।’’
প্রতিষেধকের জোগান নিয়ে এখন আর সমস্যা নেই বলে আশ্বাস দিয়েছেন আদার। আগামী বছরের গোড়ার দিকে বুস্টার ডোজ়ও মিলতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। তবে একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, সকলকে দু’টি করে ডোজ় আগে পৌঁছে দেওয়াটাই অগ্রাধিকার। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আফ্রিকায় ৩ শতাংশ মানুষ টিকা পেলেন আর অন্যত্র সবাই বুস্টার নিতে শুরু করলেন, এমন হওয়া উচিত নয়।’’ বয়স্ক মানুষ এবং যাঁদের নির্দিষ্ট প্রয়োজন রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের বুস্টার আগে দেওয়া হবে। কমবয়সিরা দু’ডোজ় পাওয়ার এক বছর পরে বুস্টার নিতে পারেন বলে আদারের মত।
একই সঙ্গে আদার তাকিয়ে আছেন, কোভিশিল্ড রফতানি ফের শুরু করার সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার দিকেও। ভারত যে ফের প্রতিষেধক রফতানি শুরু করতে চায়, সে কথা সম্প্রতি জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়াও। আদার আশা করছেন, এ মাসের শেষের দিক থেকেই সে কাজ শুরু হতে পারে। আদারের হিসেব বলছে, জানুয়ারি নাগাদ মাসিক ৩৬ কোটি ডোজ় উৎপাদনের জায়গায় পৌঁছবে সিরাম। বুস্টারের জন্য একটা বড় অংশ তার থেকে সরিয়ে রাখলেও রফতানির জন্য যথেষ্ট প্রতিষেধক হাতে থাকবে।
কোভিশিল্ড উৎপাদন ও বণ্টনে সিরাম ১০ হাজার কোটিরও বেশি অর্থ লগ্নি করেছিল। ২০ কোটির কাছাকাছি অর্থ ফিরিয়ে দিতে হয়েছে বিভিন্ন দেশকে, যাদের প্রতিষেধক পৌঁছে দেওয়া যায়নি। গত বছর দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর্বটা খুবই উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে, স্বীকার করেছেন আদার। তবে চাপের মুখে দেশ ছাড়েননি, এ কথাও বলেছেন। ঘটনাচক্রে তিনি সে সময় ব্রিটেনে ছিলেন বলেই তাঁর দাবি।