গঙ্গাসাগর মেলা চত্বর জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। শনিবার। ছবি: সমরেশ মণ্ডল।
ক্রমশ কঠোর হচ্ছে প্রশাসন। সাগর মেলা প্রাঙ্গণে পুণ্যার্থীদের কোভিড বিধি মানার ক্ষেত্রে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। রাশ কড়া হতেই সতর্কতা বেড়েছে মানুষের মধ্যেও।
শনিবার কাকদ্বীপের লট ৮ ঘাটে চোখে পড়ল সেই দৃশ্য। পুণ্যার্থীদের দূরত্ব বজায় রেখে লাইনে দাঁড়িয়ে ভেসেলের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেল। প্রশাসনের আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন। ভেসেলে ওঠার সময়ে হুড়োহুড়ি দেখা যায়নি। কচুবেড়িয়া ঘাটে নামার সময়েও শৃঙ্খলা বজায় ছিল।
মেলা প্রাঙ্গণেও এ দিন নানা পদক্ষেপ করা হয়। কপিলমুনির মন্দিরের কাছে দু’নম্বর স্নানঘাটে সমুদ্রস্নান সেরে মন্দিরে পুজো দিতেন পুণ্যার্থীরা। এ দিন ওই ঘাট থেকে কাউকেই সমুদ্রে নামতে দেওয়া হয়নি। কপিলমুনির মন্দিরে দূরত্ব বিধি বজায় রেখে পুজো দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। মন্দিরে ঢোকার মুখে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে রিং লাগানো হয়েছে। দমকলকর্মীরা মন্দির চত্বর স্যানিটাইজ় করেন। পুণ্যার্থীদের থার্মাল চেকিং হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে মাস্ক বিতরণ করতে দেখা গেল পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকদের। নামখানার নারায়ণপুর থেকে লঞ্চে অনেকে বেণুবন হয়ে গঙ্গাসাগর পৌঁছন। সেখানেও প্রশাসনের নজরদারি চোখে পড়েছে।
জমায়েত এড়াতে গঙ্গাসাগর মেলা অনলাইনে দেখানোর ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। মেলায় না এসেও পুজো দেওয়া যাবে, প্রসাদ পাওয়া যাবে ই-পুজোর মাধ্যমে। ই-স্নানের ব্যবস্থায় চাইলে সাগরের জল পৌঁছে যাবে ঘরে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, করোনা পরিস্থিতিতে এ বার বহু মানুষই মেলায় না এসে ই-পুজো বা ই-স্নানের সুবিধা নিচ্ছেন।
উত্তর কলকাতার শ্যামবাজারের বাসিন্দা প্রণয় চক্রবর্তী অনেক বছর ধরে গঙ্গাসাগরে আসছেন। তবে এ বার করোনা আবহে বাড়িতেই থাকবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর কথায়, “এ বছর গঙ্গাসাগর যাব না। সরকার অনলাইনে ই-স্নানের ব্যবস্থা করেছে। সেখানে অর্ডার করেছি। বাড়িতেই পুণ্যস্নান সারব। আগামী দিনে সংক্রমণ কমলে সাগরে গিয়ে স্নান সেরে আসব।”
ওড়িশার বালেশ্বরের বাসিন্দা বিজয় জানা বলেন, “গত দু’বছর ধরে গঙ্গাসাগরে যাচ্ছি। এ বছর করোনার জেরে সিদ্ধান্ত বাতিল করেছি। বাড়িতেই ই-দর্শন করব। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগামী বছর যাওয়া যাবে।”