নবান্নে জীবাণুমুক্তকরণের কাজ চলছে। —নিজস্ব চিত্র।
নবান্নের বেশ কয়েক জন কর্মীকে গৃহ-পর্যবেক্ষণে পাঠাল স্বাস্থ্য দফতর। বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য ভবনে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেন স্বাস্থ্যকর্তারা। ওই কর্মীদের স্বাস্থ্য দফতর থেকে বার্তা পাঠিয়ে বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যের প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত তরুণের মা পদস্থ আমলা। তিনি নবান্নে কর্মরত। ওই আমলা নিজেও বর্তমানে বেলেঘাটা আইডি-র আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। রবিবার ভোরে তাঁর ছেলে লন্ডন থেকে ফিরেছেন। তাঁর ছেলের দেহে করোনাভাইরাসের প্রমাণ মেলে মঙ্গলবার রাতে। কিন্তু, সোমবার সারা দিন ওই আমলা নবান্নে ছিলেন। তাঁর নিজের অফিসের কর্মীরাও ওই আমলার সংস্পর্শে এসেছেন। সেই কারণেই প্রথম দফায় ওই আমলার অফিসের কয়েক জন কর্মীকে আপাতত গৃহ-পর্যবেক্ষণে থাকতে বলা হয়েছে। অন্য দিকে, এ দিন নবান্নে যাননি স্বরাষ্ট্র সচিবও। বাড়ি থেকেই কাজ করছেন তিনি।
ওই আমলার নবান্নে যাওয়ার জেরেই বুধবার সকাল থেকে রাজ্য সচিবালয়ে জীবাণুমুক্তকরণের কাজ শুরু হয়। যদিও নবান্নের তরফে সরকারি ভাবে জীবাণুমুক্তকরণ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। সেখানকার এক কর্তা এটাকে ‘রুটিন কাজ’ হিসাবেই ব্যাখ্যা করেছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) নির্দেশিত করোনাভাইরাস সংক্রান্ত স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী, ওই আমলা কোথায় কোথায় গিয়েছেন, কাদের সংস্পর্শে এসেছেন, কাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, তা চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। সিল করে দেওয়া হয়েছে নবান্নে ওই আমলার ঘরটিও। নবান্নের সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। নিজের দফতর ছাড়াও নবান্নের আর কোথায় কোথায় গিয়েছিলে তিনি, তাঁর ঘরেই বা কারা এসেছিলেন, তা জানতেই ওই পদক্ষেপ।
আরও পড়ুন: এ বার সেনাবাহিনীতেও ঢুকে পড়ল করোনাভাইরাস, লেহ-তে আক্রান্ত ১ জওয়ান
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত তরুণ স্থিতিশীল, পরিবারের সদস্যরা আইডি-তে, লালারস গেল নাইসেডে
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ওই আমলার লালারসের নমুনার পরীক্ষার ফল যদি পজিটিভ আসে, তা হলে তাঁর সংস্পর্শে আসা সকলকে চিহ্নিত করে কোয়রান্টিনে পাঠানো হবে। তারই প্রস্তুতি হিসাবে চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর, প্রাথমিক তালিকাভুক্তদের গৃহ পর্যবেক্ষণে পাঠানোর পর শুরু করা হচ্ছে দ্বিতীয় পর্যায়ে চিহ্নিতকরণের কাজ। ওই পর্যায়ে চিহ্নিত করা হবে নিজের অফিসের লোকজন ছাড়া আর কার কার সংস্পর্শে তিনি এসেছেন।
অন্য দিকে, ওই আক্রান্ত তরুণের বাবা-মা, গাড়িচালক-সহ ছ’জনকে ভর্তি রাখা হয়েছে বেলেঘাটা আইডি-র আইসোলেশন ওয়ার্ডে। ওই তরুণ আর কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, কার কার সংস্পর্শে এসেছিলেন, তার একটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এমনকি সোমবার এমআর বাঙুর হাসপাতালে যে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন ওই তরুণ, তাঁর কেবিন এবং হাসপাতাল চত্বরেও জীবাণুমুক্তকরণের কাজ চলছে। ওই চিকিৎসক এবং এক রোগী সহায়ককে পাঠানো হয়েছে গৃহ-পর্যবেক্ষণে।