‘যমরাজ’-এর সচেতনতামূলক প্রচার।—ছবি পিটিআই।
হাওড়া শহরে যখন প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকায় করোনার সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, ঠিক তখনই এক-এক দিনে লালারসের নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা এক ধাক্কায় তিন-চতুর্থাংশ কমিয়ে দিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। বন্ধ করে দেওয়া হল বিভিন্ন হাসপাতাল ও কোয়রান্টিন কেন্দ্রের সামনে বেসরকারি কিয়স্ক বসিয়ে নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থাও। সেই সঙ্গে পুরসভার প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে লালারসের নমুনা সংগ্রহের শিবির। এখন শুধুমাত্র হাওড়া জেলা হাসপাতাল ও সত্যবালা আইডি-তে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে তা পাঠানো হচ্ছে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশেই নাকি এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগে যেখানে দিনে ৯০০ থেকে এক হাজার জনের নমুনা নেওয়া হচ্ছিল, এখন সেখানে নেওয়া হচ্ছে প্রায় ২৫০ জনের নমুনা।
করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়াতে গত কয়েক মাস ধরে হাওড়া শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও কোয়রান্টিন কেন্দ্রের সামনে বেসরকারি সংস্থার কিয়স্ক বসিয়ে লালারসের নমুনা সংগ্রহের কাজ চলছিল। এ ছাড়া পুরসভার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কোভিড হাসপাতাল ও সরকারি হাসপাতালগুলিতেও লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছিল। সব মিলিয়ে দিনে হাজারখানেক নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছিল। ওই দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশেই এই সংখ্যা এখন এক-চতুর্থাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। দিনে এখন আড়াইশোর বেশি নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে না।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ওই কর্তা জানান, হাওড়ায় নমুনা সংগ্রহের কিট প্রচুর রয়েছে। কিন্তু এখন শুধুমাত্র উপসর্গযুক্ত রোগীদেরই নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে।
নমুনা সংগ্রহের অধিকাংশ কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া সত্ত্বেও যে করোনা রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, তা মেনে নিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। গত ২৫ জুন হাওড়া শহরের ২৩টি জায়গায় নতুন করে লকডাউন কঠোর ভাবে চালু করার পরেও সেখানে সামগ্রিক ভাবে লোকজন বিধিনিষেধ না-মানায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
মঙ্গলবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমাদের দফতরের কার্যালয় যেখানে, সেই পি কে ব্যানার্জি রোড এবং হাওড়া ময়দান, জেলাশাসকের বাংলো, জেলা পরিষদ চত্বরে প্রতিদিন তিন-চার জন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তবু মানুষের হুঁশ নেই। কেউ মাস্ক পরছেন না। দূরত্ব-বিধিও মানা হচ্ছে না।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু মধ্য হাওড়া নয়, বর্তমানে সালকিয়া, লিলুয়া, বেলুড়েও করোনা রোগীর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ বার কন্টেনমেন্ট জ়োন না বাড়িয়ে একই এলাকার কোভিড-আক্রান্তদের বাড়িগুলিকে চিহ্নিত করা হবে। এর পরে অনেকগুলি বাড়ি নিয়ে কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হবে। সেই প্রক্রিয়া চলছে। দু’এক দিনের মধ্যে তা ঘোষণা করা হবে।