খাঁ খাঁ করছে মধ্যমগ্রাম চৌমাথা, সকাল সাড়ে ন’টায়। নিজস্ব চিত্র।
লকডাউন ঘোষণা হল রাজ্যের সবক’টি পুর শহরে। করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় সোমবার বিকেল ৫টা থেকেই কার্যকরী হচ্ছে লকডাউন। চালু থাকবে ২৭ মার্চ রাত ১২টা পর্যন্ত। সে ক্ষেত্রে আপৎকালীন পরিষেবা বাদ দিয়ে বাকি সব কিছু বন্ধ হচ্ছে রাজ্যের পুর শহরগুলিতে।
রবিবারই কেন্দ্রের তরফ থেকে কলকাতা-সহ দেশের ৭৫টি জেলা লকডাউনের প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্রে। ওই প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছিল, রাজ্য সরকারগুলি চাইলে সেই লকডাউনের এলাকা বাড়াতে পারে। তার পরেই রবিবার নবান্ন থেকে কলকাতা-সহ রাজ্যের সব পুর শহরকে লকডাউন করার বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে।
দেশে করোনা সংক্রমণের যে হিসেব সামনে আসছে, তাতে পশ্চিমবঙ্গে তথা কলকাতার পরিস্থিতি অন্য কয়েকটি রাজ্যের চেয়ে অপেক্ষাকৃত ভাল। কিন্তু নাগেরবাজার এলাকার এক প্রৌঢ় সাম্প্রতিক কালে বিদেশযাত্রা না করা সত্ত্বেও যে ভাবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভেন্টিলেশনে, তাতে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন। প্রশাসন এখনও সে রকম কিছু ঘোষণা করেনি। কিন্তু পরিস্থিতি সে দিকে গড়িয়ে যাক, এমনটাও প্রশাসন চাইছে না। সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা হিসেবে কলকাতা-সহ রাজ্যের সব পুর শহরকে লক ডাউন করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। সোমবার বিকেল ৫টা থেকে অত্যাবশ্যক এবং আপৎকালীন বিষয় ছাড়া যাবতীয় প্রকাশ্য কার্যকলাপ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে রাজ্যের পুর শহরগুলিতে।
আজ অর্থাৎ রবিবার সকাল ৭টা থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদীর আহ্বানে ‘জনতা কার্ফু’ চলছে গোটা দেশে। অত্যাবশ্যক এবং আপৎকালীন পরিষেবার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁরা ছাড়া অন্য সকলকে সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। রাত ৯টার পর থেকে ‘জনতা কার্ফু’র মেয়াদ শেষ হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু সোমবার বিকেল থেকে যদি প্রশাসনের নির্দেশে রাজ্যের সব পুর শহরে বাধ্যতামূলক লকডাউন কার্যকরী হচ্ছে। অর্থাৎ রাজ্যের রাজধানী কলকাতা, সবক’টি জেলা সদর, মহকুমা শহর, কোনও কোনও ক্ষেত্রে ব্লক স্তরের বা তার চেয়ে ছোট শহরও পুরোপুরি বিধিনিষেধের আওতায় চলে আসছে।
আরও পড়ুন: ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাতিল সব রকম যাত্রিবাহী ট্রেন, বন্ধ মেট্রোও
আরও পড়ুন: দেশে মৃত্যু বেড়ে ৬, আক্রান্ত বেড়ে ৩৪১, লকডাউন বহু রাজ্যে: করোনা আপডেট এক নজরে
লকডাউনের সময়ে পুরোপুরি ঘরে থাকার জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় এবং অত্যাবশ্যক যে সব সামগ্রী দরকার, তা সংগ্রহ করে নেওয়ার জন্য সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অবশ্য সময় পাবেন পুর শহরগুলির বাসিন্দারা। তবে লকডাউনের সময়ে জনতা যাতে বিপদে না পড়েন, তা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল, চিকিৎসা পরিকাঠামো, ওষুধের দোকান-সহ নানা আপৎকালীন বন্দোবস্ত খোলা রাখা হবে বলে জানা যাচ্ছে। আপাতত ২৭ মার্চ পর্যন্ত এই লকডাউন ঘোষিত হল।