মঙ্গলবারের এনআরএস। সুনসান হাসপাতাল। নিজস্ব চিত্র।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী মৃত্যুর জেরে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী-সহ মোট ৭৯ জনকে গৃহ-পর্যবেক্ষণে পাঠানো হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে একটি বিভাগও। কিন্তু, আতঙ্কের আবহে মঙ্গলবার এনআরএস-মুখো হতে দেখা গেল না কাউকে। সুনসান হাসপাতাল চত্বর। যদিও গৃহ-পর্যবেক্ষণে পাঠানো ৭৯ জনের মধ্যে এ দিন ৩০ জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে। জানা গিয়েছে, যে ৩০ জনের নমুনা পাঠানো হয়েছিল, তাঁদের সকলেরই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন করে আরও দুই রোগীর শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েছে। ফলে, উদ্বেগে রয়েছেন ওই হাসপাতালের অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা। একাংশের কর্মীদের মধ্যে রীতি মতো আতঙ্কও রয়েছে।
অন্যান্য দিনের তুলনায় মঙ্গলবার রোগীর আনাগোনাও অনেকটাই কম। আপাতত বন্ধ রয়েছে মেডিসিন ওয়ার্ডের পুরুষ বিভাগ। জীবাণুমুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে সেখানে। একসঙ্গে এত জনকে ১৪ দিনের জন্য গৃহ-পর্যবেক্ষণে পাঠানো হলেও, হাসপাতালে পরিষেবা দিতে কোনও সমস্যা হবে না বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। তবে একাংশের জুনিয়ার ডাক্তার, নার্স, পিজিটি, হাউসস্টাফ এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে ওই ঘটনার পর। তাঁরা প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সরঞ্জাম সরবরাহ স্বাভাবিক রাখারও দাবি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কলকাতার ফুটপাতেও এ বার করোনা হানা, ২ জন ভর্তি হাসপাতালে
আরও পড়ুন: রাজ্যে করোনায় মৃত ৫, আক্রান্ত ৬৯, বললেন মমতা, অভিজিৎ দিলেন পরামর্শ
গত ৩০ মার্চ হিমোফিলিয়ার এক রোগী প্রথমে পুরুষদের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। বুধবার তাঁকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তরিত করা হয়। হাসপাতালের সিসিইউয়ে চিকিৎসাধীন ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। পরে ওই রোগীর করোনা-রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
নতুন করে দু’জন করোনা সন্দেহে ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। গত সোমবার রাতে তাঁদের রিপোর্ট পজেটিভ আসায় বেলেঘাটা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই দু’জনের মধ্যে একজন ফুটপাতবাসী। তা নিয়েও উদ্বেগ ছড়িয়েছে হাসপাতাল চত্বরে। এনআরএসের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা চিকিৎসক শান্তনু সেন বলেন, “গৃহ পর্যবেক্ষণে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার মতো কিছু হয়নি এখনও।”
এনআরএস হাসপাতালে আলাদা করে করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় মাইকিং করা হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় ঘোষণাও করা হচ্ছে। একসঙ্গে এত জনকে গৃহ-পর্যবেক্ষণে কেন পাঠাতে হল? কত জনের নমুনা রিপোর্ট মিলেছে, এ বিষয়ে হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ তরুণ পাঠক বলেন, “আমাদের কাছে যখন যে রকম খবর আসছে, তা আমরা স্বাস্থ্য ভবনে পাঠিয়ে দিচ্ছি। ওখান থেকে খোঁজ নিয়ে নিন।”
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)