গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
করোনা সংক্রমণের সাম্প্রতিক স্ফীতির একেবারে প্রাথমিক পর্বে শুধু কলকাতা ও সংলগ্ন হাওড়া, হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছিল। এ বার দেখা যাচ্ছে, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম-সহ দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতেও লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণের হার। উত্তরবঙ্গেও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। পরিসংখ্যান বলছে, রাজ্যের ১০ জেলায় সংক্রমণের হার ৩০ শতাংশের বেশি। অন্য দিকে, গত মঙ্গলবার রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা সামান্য কমার পর টানা দিন আবার তা বাড়ল। বেড়ে পৌঁছে গেল সাড়ে ২৩ হাজারের কাছে। যদিও গত রবিবার রাজ্যে দৈনিক আক্রান্ত সব রেকর্ড ভেঙে ২৪ হাজার পার করেছিল। সক্রিয় রোগীর সংখ্যা আরও বেড়ে ১ লক্ষ ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেল। বাড়ল মৃত্যুও।
বৃহস্পতিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২৩ হাজার ৪৬৭ জন। কলকাতায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৭৬৮ জন। উত্তর ২৪ পরগনায় দৈনিক আক্রান্ত আরও বেড়ে হল ৪ হাজার ৭২৮। কলকাতা সংলগ্ন হাওড়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দৈনিক আক্রান্ত সামান্য কমলেও অনেকটা বাড়ল হুগলিতে।
দৈনিক সংক্রমণ আগেই হাজারের গণ্ডি আগেই পার করেছে পশ্চিম বর্ধমানে। এ বার এক হাজারের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেল পূর্ব বর্ধমান ও বীরভূমও। নতুন আক্রান্ত ৬০০-র কাছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। এ ছাড়াও নদিয়া ও মুর্শিদাবাদে দৈনিক আক্রান্ত বেড়ে হল যথাক্রমে ৭০৮ ও ৫৭৬।
উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতিও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং কোচবিহারে অনেকটা বাড়ল নতুন সংক্রমণ।
দৈনিক আক্রান্তের পাশাপাশি জেলায় জেলায় সংক্রমণের হারেও বৃদ্ধি অব্যাহত। কলকাতায় দৈনিক সংক্রমণের হার ৪৪ শতাংশের কাছে পৌঁছে গেল আবার। কলকাতা-সহ যে ১০ জেলায় সংক্রমণের হার ৩০ শতাংশের বেশি, তার মধ্যে রয়েছে— বাঁকুড়া (৩০.৪০%), বীরভূম (৩৯.৪৩%), দার্জিলিং (৩৮.৪৪%), হুগলি (৩৪.৩০%), হাওড়া (৪২.৪০%), মালদহ (৩৭.৯২%), উত্তর ২৪ পরগনা (৩৭.৯৮%), পশ্চিম বর্ধমান (৩৬.৫৪%), পূর্ব বর্ধমান (৩০.৬৫%)। রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণের হার আরও বেড়ে হল ৩২.১৩ শতাংশ।
শেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের। এর মধ্যে কলকাতায় মারা গিয়েছেন ছ’জন। এ ছাড়া হাওড়া, হুগলি এবং উত্তর ২৪ পরগনায় চার জন করে কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সংক্রমণমুক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ১৩৯ জন। কোভিড পরীক্ষা হয়েছে ৭৩ হাজার ৪৩ জনের। বাংলায় সক্রিয় রোগীর সংখ্যা আরও বেড়ে হল ১ লক্ষ ৩১ হাজার ৫৫৩।