ছবি: সংগৃহীত।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ নয়। কলকাতায় এমআর বাঙুর হাসপাতালকে করোনা হাসপাতাল বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানকার অন্য রোগীদের এসএসকেএম এবং শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে সরিয়ে দেওয়া হবে বলে শুক্রবার নবান্নে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সরকার প্রথমে কলকাতা মেডিক্যালে ২২০০ শয্যার করোনা হাসপাতাল তৈরির কথা ভেবেছিল। কিন্তু সেখানে কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দেয়। তার পরেই বাঙুরকে করোনা চিকিৎসার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে বলে সরকারি সূত্রের খবর।
জেলায় জেলায় করোনা হাসপাতাল তৈরিতে বা ওই রোগে মৃতদের দেহ সৎকারে যে-ভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কেউ চায় না, রাজ্যে একটিও কোভিড হাসপাতাল তৈরি হোক। কেউ চায় না, এক জনও কোভিডে আক্রান্ত হোন। কিন্তু এ তো মহামারি। মানুষ আক্রান্ত হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতেই হবে। তাই কোভিড হাসপাতাল তৈরিতে বাধাদান মেনে নেওয়া হবে না। সব রকম সতর্কতা নিয়েই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এবং কাজ করছে প্রশাসন।’’
আরও পড়ুন: নিজামুদ্দিনের সভা-ফেরতদের সোজা নিভৃতবাস
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে সেই দেহ থেকে জীবাণু ছড়ায় না। সরকার নিয়মকানুন মেনেই সৎকার করছে। কেউ যেন বাধা না-দেন।’’ মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, ‘‘যাঁরা বাধা দিচ্ছেন, তাঁরা মানবিক হোন। ভাবুন, আপনার পরিবারে যদি কেউ আক্রান্ত হন, তিনি কি বিনা চিকিৎসায় থাকবেন? করোনা হয়েছে বলে কেউ হাসপাতালে এসে চিকিৎসা পাবেন না!’’ চিকিৎসায় দ্রুত সুস্থ হয়ে রোগীরা বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন, এটাই আশার কথা, জানান মুখ্যমন্ত্রী।
দু’দিন আগেই বেলঘরিয়ার সাগর দত্ত হাসপাতালকে করোনা হাসপাতালে রূপান্তরণের বিরোধিতা করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। কয়েকটি হাসপাতালে নার্সেরাও বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। সে-দিকে ইঙ্গিত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘করোনাকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এই লড়াইয়ে জিততে হবে। তাই চিকিৎসা করব না, এ কথা বললে চলবে না। অন্য কোনও ক্রনিক রোগ না-থাকলে করোনা ভাইরাসে কিছু হবে না। তাই মানবিক হয়ে সেবাকাজে এগিয়ে আসতে হবে।’’
এ দিকে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানান, তাঁরা আবার সাধারণ চিকিৎসা চালু করেছেন। হৃদ্যন্ত্রের অস্ত্রোপচার, দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা, সিজার— সবই চলছে। তিনি এ-ও বলেন, ‘‘করোনা চিকিৎসার জন্য আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত। সিসিইউ-এ ১৫টি ভেন্টিলেটর লাগানো শয্যা তৈরি আছে। আরও ছ’টি এই ধরনের শয্যা তৈরি করছি। স্বাস্থ্য দফতর প্রয়োজন মনে করলে করোনা রোগীদের এখানে ভর্তি করতে পারে।’’ মেডিক্যালের কার্ডিয়োথোরাসিক বিভাগের প্রধান তথা রাজ্যে করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় তৈরি চিকিৎসক কমিটির অন্যতম সদস্য প্লাবন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মেডিক্যালকে করোনা হাসপাতাল করার কথা আগে মুখে মুখে বলা হয়েছিল। সেটা এখনই হচ্ছে না। পরিস্থিতি দেখে এগোতে হবে। যে-সব রোগীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল, আপাতত তাঁদের ফেরানো হচ্ছে। জটিল অস্ত্রোপচারও শুরু হয়েছে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)