Coronavirus in India

অ্যান্টি ভাইরালের খোঁজে নাইসেড

নাইসেড প্রধান জানিয়েছেন, করোনা পজ়িটিভ হওয়ার পরে কেন অনেক রোগীর শারীরিক অবস্থা গুরুতর হয়ে যাচ্ছে, গবেষণা সেই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করবে।

Advertisement

সৌরভ দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২০ ০৫:১৯
Share:

ফাইল চিত্র।

নোভেল করোনাভাইরাসের অ্যান্টি ভাইরালের সন্ধানে এ বার কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থা নাইসেডও (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজ়িজ়েস)। ভাইরাস আইসোলেশনের মাধ্যমে এই গবেষণার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইসিএমআর-নাইসেড প্রধান শান্তা দত্ত।

Advertisement

নাইসেড অধিকর্ত্রী জানিয়েছেন, পুণের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি’র পরে নাইসেড নোভেল করোনাভাইরাসের অ্যান্টি ভাইরালের সন্ধানে ভাইরাস পৃথকীকরণের মাধ্যমে গবেষণার পথে হেঁটেছে। কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থার ‘বিএসএল ৩’ পর্যায়ের গবেষণাগারে এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে। নাইসেড প্রধানের বক্তব্য, মানবদেহের কোষে কোভিড ১৯ প্রবেশ করার পরে তা কী ধরনের আচরণ করে সেটি ল্যাব স্তরে ভাইরাস আইসোলেশনের মাধ্যমে পর্যালোচনা করা হবে।’’ নদিয়ার কল্যাণীতে অবস্থিত ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ’ এবং আইআইটি গুয়াহাটির সঙ্গে যৌথ ভাবে নাইসেড এ কাজ করছে বলে জানিয়েছেন শান্তা দেবী।

আইআইএসইআরের বিজ্ঞানী পার্থ রায় জানান, সরাসরি মানুষের দেহে ভাইরাসের গতিবিধি পর্যালোচনা করা মুশকিল। তাই ভাইরাসকে দেহ থেকে বার করে গবেষণাগারে বৃদ্ধি করা মানবদেহের কোষের মধ্যে সেটিকে প্রবেশ করানো হয়। কৃত্রিম ভাবে সংক্রমণের গতিবিধি পর্যালোচনা করার এই পদ্ধতি হল ‘ভাইরাস আইসোলেশন’।

Advertisement

আরও পড়ুন: রাজ্যে নতুন করোনা আক্রান্ত ১৯৩, স্বাস্থ্যকর্মী-সহ মৃত পাঁচ

নাইসেড প্রধান জানিয়েছেন, করোনা পজ়িটিভ হওয়ার পরে কেন অনেক রোগীর শারীরিক অবস্থা গুরুতর হয়ে যাচ্ছে, গবেষণা সেই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করবে। শান্তাদেবীর কথায়, ‘‘আক্রান্তের ভেন্টিলেশনে চলে যাওয়ার কারণ হিসাবে সাইটোকাইন স্ট্রমের কথা বলা হচ্ছে। মানুষের দেহের কোষে কেন সাইটোকাইন বাড়ছে, সাইটোকাইন বৃদ্ধির সংখ্যা কেমন তা গবেষণা করে দেখা হবে। ভাইরাস কী ভাবে মানুষের দেহে বংশ বৃদ্ধি করছে সেটা জানলে চিকিৎসা করতে সুবিধা হয়। ল্যাব স্তরে ভাইরাস আইসোলেট করে অ্যান্টি ভাইরালের খোঁজ পেতে চাইছি আমরা।’’

আরও পড়ুন: লালারসের নমুনা পরীক্ষায় কড়াকড়ি নয় পরিযায়ীদের

বিজ্ঞানী পার্থবাবু জানান, নোভেল করোনাভাইরাসের মতো সংক্রমণ থেকে শরীরে ইনফ্লেমেশন বা প্রদাহ তৈরি হয়। আদতে যা হল শাঁখের করাত। অনিয়ন্ত্রিত প্রদাহের জন্য মানবদেহে ক্যানসার বাসা বাঁধতে পারে। সেই সংক্রান্ত গবেষণার কাজে যুক্ত রয়েছেন পার্থবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘এ ধরনের সংক্রমণে দেহের মধ্যে তৈরি হওয়া প্রদাহই রোগ প্রতিরোধের প্রাথমিক অস্ত্র। কিন্তু সেই প্রদাহ অনিয়ন্ত্রিত হলে তা শরীরের নিজের কোষের ক্ষতি করে। তা থেকে একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়। সাইটোকাইন স্ট্রম এই অনিয়ন্ত্রিত প্রদাহের প্রধান উপসর্গ।’’

গবেষণা প্রসঙ্গে এনএনআইএসইআরের ডিরেক্টর সৌরভ পাল বলেন, ‘‘মানবদেহে প্রয়োগ না-হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা মুশকিল। তবে এ ধরনের কাজ যে হচ্ছে, সেটা খুব আশাব্যঞ্জক।’’

অ্যান্টি ভাইরালের পাশাপাশি ভাইরাস চিহ্নিতকরণে ‘ডায়গনস্টিক কিট’ তৈরি নিয়েও কাজ করছে নাইসেড। এ বিষয়ে নাইসেড প্রধান বলেন, ‘‘আরটি-পিসিআরে এখন যে ভাবে পজ়িটিভ নাকি নেগেটিভ বোঝা যায়, তা অত্যন্ত খরচসাপেক্ষ। সময়ের পাশাপাশি এ কাজে দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন। প্রেগন্যান্সি টেস্টের মতো সহজেই করোনাভাইরাস পজ়িটিভ যাতে বোঝা যায় সে ধরনের রোগ চিহ্নিতকরণের উপায় খোঁজা হচ্ছে।’’ আইআইটি খড়গপুরের সঙ্গে যৌথ ভাবে এই গবেষণার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন নাইসেড অধিকর্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement