ফাইল চিত্র।
করোনা-পরিস্থিতির মোকাবিলায় ২০০ কোটি টাকার তহবিল তৈরি করল রাজ্য সরকার। সোমবার নবান্ন সভাঘরে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি, রাজ্য ও কেন্দ্রের প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে করোনা-আক্রান্তদের চিকিৎসায় যুক্ত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, সংশ্লিষ্ট কর্মীদের প্রত্যেকের জন্য ১০ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমার কথাও ঘোষণা করেন তিনি।
স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তায় আগে থেকে বেশ কিছু উপকরণ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। নবগঠিত তহবিল থেকে সেই খাতে টাকা খরচ করা হবে। করোনা-আক্রান্তের চিকিৎসা করার জন্য বিশেষ ধরনের পোশাকের প্রয়োজন হয়। সেই ধরনের দু’লক্ষ পোশাকের বরাত দিয়েছে রাজ্য। দু’লক্ষ মাস্ক এবং দু’লক্ষ এন-৯৫ মাস্ক কেনারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। দূর থেকে জ্বর পরীক্ষা করার জন্য কেনা হচ্ছে ১০ হাজার ‘থার্মাল গান’। সেই সঙ্গে ৩০০টি ভ্রাম্যমাণ ‘ভেন্টিলেশন ইউনিট’-এর বরাত দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, চিকিৎসক ছাড়াও স্বাস্থ্যকর্মী এবং সাফাইকর্মীদের ক্ষেত্রে এই সব উপকরণ খুবই উপযোগী হবে।
মমতা জানান, করোনা সংক্রমণ সন্দেহে যাঁদের চিকিৎসা চলছে অথবা যাঁদের কোয়রান্টিনে রাখা হচ্ছে, সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েও চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিরলস ভাবে তাঁদের চিকিৎসা ও শুশ্রূষা করে চলেছেন। তাই তাঁদের জন্য সরকারকে আলাদা ভাবে ভাবতেই হচ্ছে। রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে এমনিতে সকলেরই পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিমাকৃত রাশির চিকিৎসা পাওয়ার ব্যবস্থা আছে। চলতি পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক ও নার্সদের আরও পাঁচ লক্ষ মিলিয়ে বিমাকৃত অর্থের পরিমাণ ১০ লক্ষ টাকা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের যে-সব কর্মী এ রাজ্যে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে কাজ করছেন, তাঁদেরও এই প্রকল্পের আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে সাফাইকর্মীদেরও। ‘‘এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখার ক্ষেত্রে সাফাইকর্মীদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে,’’ বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা জানান, রাজ্যে আরও পরীক্ষা কেন্দ্র গড়ে তোলার ব্যাপারে কথাবার্তা শুরু করেছে সরকার। কেন্দ্র এই ধরনের পরীক্ষা কেন্দ্র তৈরি করলে রাজ্য জায়গা দিয়ে সহযোগিতা করবে। ক্লাবগুলিকেও সচেতনতা প্রচারের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। রেল স্টেশন, বিমানবন্দর, সীমান্ত এলাকাগুলিতে বাড়তি নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। অভিযোগ উঠছে, অনেক ক্ষেত্রে রেল স্টেশন বা বিমানবন্দরে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে না। সম্ভবত সেই দিকটি মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রী এই নির্দেশ দিয়েছেন বলে প্রশাসনিক সূত্রের ধারণা।