(বাঁ দিকে) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
গোটা দেশে বিভিন্ন প্রান্তে আন্তর্জাতিক মানের ৪০টি ‘আইকনিক টুরিস্ট ডেস্টিনেশন’ গড়ে তুলে প্রায় ৩৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু প্রাপক-তালিকায় সিকিম, অসম বা বিহারের মতো পড়শি রাজ্যগুলি ঠাঁই পেলেও নাম নেই পশ্চিমবঙ্গের। তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দফতরে বিবেচনার পরে, অর্থ মন্ত্রকের সম্মতিতে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রক চলতি সপ্তাহে ওই প্রকল্পের ছাড়পত্রের কথা রাজ্যগুলিকে জানিয়েছে। সেখানে দেশের ২৩টি রাজ্যের ৪০টি পর্যটন প্রকল্পকে বাছা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ লাগোয়া সিকিমের নামচির ভালেদুঙ্গাতে নতুন ‘স্কাইওয়াক’ তৈরির জন্য ৯৭.৩৭ কোটি এবং ভারত-চিন সীমান্তের নাথু লাকে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র করতে পরিকাঠামো গড়ায় ৬৮.১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। নতুন বছরের গোড়া থেকেই রাজ্যে-রাজ্যে পর্যটন প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।
১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনায় টাকা না পাওয়া থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা, বাড়ি-বাড়ি জল সংযোগের প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ মেলায় সমস্যা নিয়ে ইতিমধ্যে সরব হয়েছে রাজ্যের শাসক দল। সেখানে পর্যটন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় টাকা না পাওয়া প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের অন্যতম মুখপাত্র উদয়ন গুহ বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার নানা ভাবে বাংলার সরকারকে হেয় করার চেষ্টা করছে। এ জন্যে নানা প্রকল্পে টাকা আটকে দিচ্ছে। রাজ্যের ন্যায্য পাওনা দিচ্ছে না।” তাঁর অভিযোগ, “বিজেপি বাংলাকে বঞ্চনা করে চলছে।”
তবে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “রাজ্য সরকারের অসহযোগিতাতেই কেন্দ্রীয় সরকার বার বার এ রাজ্যের প্রতি বিমুখ হয়ে পড়ছে।” তাঁর দাবি, পর্যটন মন্ত্রকের টাকা বরাদ্দ করার প্রক্রিয়াটি প্রতিযোগিতামূলক ছিল। প্রত্যেকটি রাজ্যকে প্রকল্প পাঠাতে হয়েছিল। তার পরে তা নিয়ে অনলাইনে ভোট নেওয়া হয়। তাতে পশ্চিমবঙ্গ স্থান পায়নি। সুকান্তের পাল্টা দাবি, “এই প্রতিযোগিতায় যোগদানের চেষ্টায় রাজ্য পর্যটন দফতরের তরফে খামতি ছিল বলে জেনেছি। এত বড় কর্মযজ্ঞে আমাদের রাজ্য সুযোগ হারাল জেনে আমারও খারাপ লাগছে।”
রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন বা পর্যটনসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। রাজ্য প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে (সিএমও) কেন্দ্রীয় বরাদ্দের তালিকায় রাজ্যের নাম না থাকার বিষয়টি জানানো হয়েছে।