যৌথ প্রচারে নেতাদের চান কংগ্রেস কর্মীরা

বাম-কংগ্রেসের কর্মীরা এক সঙ্গে মিছিল করছেন। এ বার দু’দলের নেতাদেরও এক সঙ্গে প্রচারে নামার দাবি উঠল। রবিবার সকালে শিলিগুড়ি পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে শিলিগুড়ির সিপিএম প্রার্থী অশোক ভট্টাচার্যের সমর্থনে একটি মিছিল হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৬ ০৩:৩৬
Share:

বাম কংগ্রেস জোটের মিছিল শিলিগুড়িতে।—নিজস্ব চিত্র

বাম-কংগ্রেসের কর্মীরা এক সঙ্গে মিছিল করছেন। এ বার দু’দলের নেতাদেরও এক সঙ্গে প্রচারে নামার দাবি উঠল। রবিবার সকালে শিলিগুড়ি পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে শিলিগুড়ির সিপিএম প্রার্থী অশোক ভট্টাচার্যের সমর্থনে একটি মিছিল হয়। সিপিএম কর্মীরা অশোকবাবুকে সামনে রেখে মিছিল শুরু করলেও শেষে তাতে এলাকার কংগ্রেস নেতা-কর্মীরাও দলীয় পতাকা নিয়ে সামিল হন। ওয়ার্ডের কংগ্রেস কমিটির সভাপতি রাজেশ যাদব অশোকবাবুর পাশে থেকে কর্মীদের নিয়ে বাড়ি বাড়ি জোটের প্রচার সারেন। উপস্থিত ছিলের এলাকার ফরওয়ার্ড ব্লক কাউন্সিলর দুর্গা সিংহ-ও। সেই মিছিল থেকেই নিচু তলার কংগ্রেস কর্মীরা দাবি তুললেন, জেলা কংগ্রেস সভাপতি ও জেলার অন্য নেতারাও একযোগে এলাকায় এলাকায় প্রচারে নামুন। তাতে তৃণমূল হঠানোর জোটবার্তা আরও জোরদার হবে।

Advertisement

স্থানীয় কংগ্রেস কর্মীদের দাবি, ‘‘সমতলের আসনগুলি কে কোথায় দাঁড়াচ্ছে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ জেলায় কোনও আসন নিয়ে সমস্যা নেই। শিলিগুড়ি, ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে বামেরা আর ফাঁসিদেওয়া, মাটিগাড়া-নকশালবাড়িতে কংগ্রেস লড়বে। দুই দলের নেতারা নিজেদের মতো করে জোটের প্রচারও করছেন। কিন্তু একযোগে প্রচার হলে তাতে প্রচারে মাত্রা তো বাড়বেই, দুই দলের কর্মীরা আরও সক্রিয় হয়ে উঠবেন।’’

বিষয়টি নিয়ে জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকার কোনও মন্তব্য করেননি। তবে জেলা কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র জীবন মজুমদার বলেছেন, ‘‘আসন রফা বা জোট তো প্রায় চূড়ান্ত। স্থানীয় স্তরে সব জায়গায় প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই হিসাবে স্থানীয় নেতা, কর্মীরা বামেদের সঙ্গে মিছিলও করছেন। এটা হবেই। তবে জেলা স্তরে বা বিধানসভা ভিত্তিক যৌথ প্রচারের কোনও সিদ্ধান্ত এখনও প্রদেশ কংগ্রেস থেকে জানানো হয়নি। তেমন কোনও নির্দেশ আসলে আমরাও নামব।’’

Advertisement

ইতিমধ্যে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী জোটের হয়ে রাজ্য জুড়ে যৌথ প্রচারে কংগ্রেসের কোনও আপত্তি নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু রাজ্য সিপিএম বা বামফ্রন্ট নেতৃত্ব তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। আসন রফার ভিত্তিতে যে যার মতো প্রচার করবে বলে এক দফায় রাজ্যের বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ঘোষণাও করেছেন। বহু বাম নেতাই মনে করছেন, তৃণমূল বিরোধী জোট যখন হয়েছে, তখন একযোগে প্রচারের অসুবিধা কোথায়! স্থানীয় স্তরে বা জেলা স্তরে তো তা হতেই পারে। যেমন এদিন শিলিগুড়ির বামপ্রার্থী অশোকবাবু কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের নিয়েই মিছিল করেছেন।

এলাকার কংগ্রেস সভাপতি রাজেশ যাদবের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল হঠানোর ডাক দিয়ে আমরা এক সঙ্গে ভোটে লড়াই করছি। এতে সকলে মিলে প্রচার করাটাই স্বাভাবিক। আমরা এলাকায় তাই করেছি। আমাদের আশা, জেলা বা প্রদেশের নেতারাও আগামী দিনে এইভাবে প্রচারে নামবেন। বামেদেরও বিষয়টি নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’’

মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি এবং ফাঁসিদেওয়া কেন্দ্রে কংগ্রেস লড়াই করলেও বামেরা কিন্তু নিজেদের মতো করে পুরোদমে প্রচারে নেমেছে। কংগ্রেসের প্রার্থীর নাম ঘোষণা না হওয়ায় কংগ্রেস প্রচারে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও তা সামলাতে ময়দানে রয়েছেন খোদ বাম নেতারাই। শিলিগুড়ির প্রার্থী অশোকবাবু নিজে মাটিগাড়া এলাকায় একাধিক সভা করে দলীয় নেতা-কর্মী, সমর্থকদের কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার আবেদনও জানিয়েছেন। তবে সেখানে প্রচারে কংগ্রেসকে বামেরা এখনও পাশে পায়নি। অশোকবাবু বক্তব্য, ‘‘আমাদের দায়িত্ব এ বার অনেক বেশি। আমরা কংগ্রেসের আসনে প্রচার করব। ওঁরাও আমাদের আসনে করছে। এদিন আমার মিছিলে স্থানীয় কংগ্রেস কর্মীরা যোগ দিয়েছিলেন। আগামী দিনে, সিদ্ধান্ত হলে সকলে মিলে প্রচার হতেও পারে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement