ফাইল চিত্র।
নিজেদের দল গঠনের পরে প্রায় প্রতিটি সভা থেকেই জোটের বার্তা দিচ্ছেন আব্বাস সিদ্দিকী। বাম ও কংগ্রেসও তাঁর দলের সঙ্গে আসন-রফায় আগ্রহী। সব কিছু ঠিকমতো এগোলে আগামী সপ্তাহের গোড়ায় এ বার আলোচনার টেবিলে বসতে পারে তিন পক্ষ। আব্বাসের দল ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)কত আসন চাইবে এবং বাম ও কংগ্রেস তাদের জোটের ভাগ থেকে কে কত আসন ছাড়বে, সে সব আলোচনা হতে পারে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেই।
জোট চেয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে চিঠি দিয়েছিলেন আব্বাস। কংগ্রেস অপেক্ষা করছিল তাঁর তরফে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবের। কংগ্রেস সূত্রের খবর, চিঠি পৌঁছেছে তাদের কাছেও। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী আব্বাসদের বার্তা পেয়ে বিষয়টি নিয়ে কথাবার্তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানকে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের সঙ্গেও এই প্রসঙ্গে কথা হয়েছে মান্নানের। তিনিও বিরোধী দলনেতার দৌত্যে ভরসা রাখার কথাই বলেছেন। সূত্রের খবর, আব্বাসের সঙ্গে আজ, বুধবারই মান্নানের বৈঠকের সম্ভাবনা আছে।
জোট-শিবিরে পারস্পরিক বোঝাপড়ায় ঠিক হয়েছে, আব্বাস রাজি থাকলে বাম ও কংগ্রেস নেতারা তাঁদের সঙ্গে একত্রেই আলোচনায় বসবেন। তবে তার আগে কংগ্রেসের জেলা সভাপতিদের নিয়ে ফের এক প্রস্ত বৈঠক ডাকছেন অধীরবাবু। কারণ, কোন জেলায় সংখ্যালঘু বা জনজাতি-প্রধান কোন আসন আব্বাসদের ছাড়া যেতে পারে, সেই ব্যাপারে দলের জেলা নেতৃত্বের মনোভাব বুঝে নিতে চায় প্রদেশ কংগ্রেস।
ডায়মন্ড হারবারের মোহনপুর মোড়ের কাছে মঙ্গলবারই একটি সভা থেকে ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস ফের বাম ও কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের বার্তাই দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘জনগণও চায়, জোট হোক। জোট হলে সকলের ভাল হবে।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুকে জোটের বার্তা দিয়ে আমরা চিঠি দিয়েছি। কংগ্রেসের অধীর চৌধুরীর সঙ্গেও আমাদের কর্মীরা যোগাযোগ রাখছেন।’’ পাশাপাশিই আব্বাস জানিয়েছেন, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ১০টি আসনে তাঁরা প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্যে প্রস্তুতি চালাচ্ছেন।
উত্তর ২৪ পরগনার সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত কেন্দ্র বাদুড়িয়ায় এ দিনই যৌথ মিছিল ও সমাবেশে ছিলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী, সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা দেবপ্রসাদ রায়, দলেরে জেলা (গ্রামীণ) সভাপতি অমিত মজুমদার প্রমুখ। সুজনবাবু বলেন, ‘‘রাজ্যে তৃণমূলকে সরকার থেকে সরাতে হবে কিন্তু বিজেপিকে বাংলায় জায়গা দেওয়া যাবে না। এই জন্য বৃহত্তর বাম ও গণতান্ত্রিক জোটকে শক্তিশালী করতে হবে।’’ তাঁর কটাক্ষ, এক সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলতেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের হাতে রক্তমাখা, মানিক সরকারকে আক্রমণ করতেন, এখন তাঁদেরই নাম নিতে হচ্ছে! বিজেপি ও তৃণমূল নেতারা যে ভাষায় কথা বলছেন, বাংলার মানুষের ভাষা তা নয় বলেও সরব হয়েছেন বাম ও কংগ্রেস নেতারা।