সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়।
নানা সরকারি সংস্থার ‘বেনিয়ম ও দুর্নীতি’র কথা প্রকাশ্যে আনায় দলের এক নেতাকে পুলিশ দিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আনল কংগ্রেস। আদালতে মামলা ছাড়াও গোপীবল্লভপুর, নন্দীগ্রাম, পুরুলিয়া-সহ একাধিক থানায় ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। আপাতত তিনি বাড়িছাড়া। কংগ্রেসের অভিযোগ, সন্ময়বাবু ‘রাজরোষে’র শিকার। তাঁর হয়ে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও আইনি লড়াই চালানোর কথাও বলেছে দল। শাসক দল তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, ‘অসত্য’ পরিবেশন করে কংগ্রেসের ওই মুখপাত্র অনেককেই ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন এবং সম্মানহানি ঘটিয়েছেন।
প্রাক্তন কাউন্সিলর সন্ময়বাবু একটি পোর্টাল চালান। ফেসবুক, ইউটিউব-সহ সামাজিক মাধ্যমেও তিনি রাজ্য সরকার ও সরকারি নানা সংস্থার কাজকর্ম নিয়ে নিয়মিত সরব। পুরবোর্ডের মেয়াদ এক বছর আগে ফুরিয়ে গেলেও পানিহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান তাঁর দফতরে কাজ করছেন এবং পুরসভার গাড়ি ব্যবহার করছেন, এই অভিযোগ সন্ময়বাবু তোলায় তাঁর বিরুদ্ধে ব্যারাকপুর আদালতে মামলা হয়েছে। সেই মামলায় তাঁকে আগামী ২৫ অক্টোবর আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে তাঁদের আগরপাড়ার বাড়ির সামনে গভীর রাতে পুলিশ সন্ময়বাবুর স্ত্রী, দাদা ও বোনকে ‘হুমকি’ দিয়েছে বলে কংগ্রেসের অভিযোগ। আব্দুস সাত্তারের নেতৃত্বে কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধিদল শুক্রবার ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার কথা জানিয়ে এসেছেন।
সাত্তার বলেন, ‘‘বিধানসভায় কংগ্রেস বিধায়ক প্রতিমা রজকের তোলা পরিবহণ দফতরে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির প্রশ্ন নিয়ে লেখালেখির পরেই সন্ময়কে হেনস্থা করা শুরু হয়েছে। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারকে উনি চিঠি দিয়ে গোটা ঘটনা জানিয়েছেন, রাজ্যপালকেও প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে। দলগত ভাবে আমরাও যাব কমিশনারের কাছে। সন্ময় একা নন।’’
রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলছেন, ‘‘উনি সত্যনিষ্ঠ প্রতিবেদন লেখেন না। নিয়মিতই যেমন তেমন ভাবে অনেককে আক্রমণ করেন। কেউ অসম্মানিত হয়ে প্রশাসনিক ও আইনি পদক্ষেপ করলে তার মুখোমুখি তো হতেই হবে!’’ তবে পার্থবাবু ‘রাজরোষে’র অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের বক্তব্য, ‘‘সরকারের কাজের সমালোচনা করলে এই ব্যবস্থা যে নেতা-মন্ত্রীরা নেন, তাঁরা আবার গণতন্ত্রের কথা বলেন? সন্ময়ের কোনও বক্তব্যে অসঙ্গতি থাকলে মানহানির মামলা হতে পারে কিন্তু তার জন্য পুলিশ সন্ত্রাসবাদীদের খোঁজার মতো বাড়ি ঘিরতে পারে?’’