(বাঁ দিকে) অধীররঞ্জন চৌধুরী, সুখেন্দুশেখর রায়। —ফাইল ছবি।
আর জি কর কাণ্ডে তৃণমূলের বর্ষীয়ান রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁকে ‘দৈত্যকুলে প্রহ্লাদ’ বলে সম্বোধন করলেন তিনি। মঙ্গলবার রাহুল গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠক করে এসে বিধান ভবনে সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন অধীর। সেখানেই এক প্রশ্নের জবাবে সুখেন্দুশেখরের ভুমিকার প্রশংসা করেন বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ।
তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলে দৈত্যকুলে প্রহ্লাদ রয়েছে। এই যে সুখেন্দুদা মন্তব্য করেছেন। আমার খুব ভাল লেগেছে, তাই বলছি দৈত্যকুলে প্রহ্লাদ আছে এখনও। তৃণমূল দলে এখনও যাঁরা বিবেকবান আছেন, তাঁরা অবশ্য এমন জঘন্য ঘটনার প্রতিবাদ করবেন।’’ অধীর আরও বলেন, ‘‘তৃণমূল দলে সবাই পাশবিক আমরা মনে করি না। তৃণমূল দলে অনেক মানবিক ব্যক্তিত্ব আছে। তাঁদের আজ নয় কাল খারাপ লাগবে, তাঁরাও বলেন। সুখেন্দুদা যা বলেছেন তার জন্য আমরা তাঁকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি বলেছেন, আমি নাতনির দাদু, মেয়ের বাবা। তাই আমি প্রতিবাদে শামিল হব।’’ এর পরেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘মমতা ব্যানার্জি রাগ করবেন বলে তো আমরা ঘরে চুপ করে বসে থাকতে পারি না।’’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার নিজের এক্স হ্যান্ডলে সুখেন্দুশেখর লেখেন, ‘‘কালকে আমিও প্রতিবাদে যোগ দেব। কেন না লক্ষ লক্ষ বাঙালির মতো আমিও এক জন মেয়ের বাবা, নাতনির দাদু।” সুখেন্দু আরও লিখেছেন, ‘‘আমাদের এ বিষয়ে সরব হতে হবে। মেয়েদের বিরুদ্ধে হিংসা অনেক হয়েছে। চলুন সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করতে হবে। যা-ই হোক না কেন।’’ দলের অবস্থানের বিরুদ্ধে গিয়ে রাজ্যসভার সাংসদের এমন মন্তব্য প্রশংসা পাচ্ছে বিরোধী শিবিরে। উল্লেখ্য, সুখেন্দুশেখর তৃণমূলের প্রতীকে তিন বার রাজ্যসভার সাংসদ হয়েছেন। গত জুন মাস পর্যন্ত ছিলেন দলের রাজ্যসভার সংসদীয় দলের মুখ্যসচেতক। এমন একজন বরিষ্ঠ নেতার এ হেন আচারণে অস্বস্তিতে পড়ছে বাংলার শাসকদল। শুধু সুখেন্দুশেখরই নয়, আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার শহরের ‘রাত দখলে মেয়েরা’-কর্মসূচিতে যোগদানের কথা জানিয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন এবং তাঁর স্ত্রী ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাকলি সেন। এই ঘটনার জেরে শান্তনুকে দলের মুখপাত্রের পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। যদিও, তৃণমূলের আরও একটি সূত্র জানাচ্ছে, অনেক আগেই মুখপাত্রের পদ থেকে সরানো হয়েছিল শান্তনুকে।