অধীররঞ্জন চৌধুরী ও বিমান বসু।
আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ১৩০ আসনে লড়ার দাবি জানাল কংগ্রেস। কংগ্রেসের ওই দাবির সঙ্গে সহমত নয় বামেরা। যার ফলে রবিবার পারদ চড়ল বাম-কংগ্রেসের জোটের বৈঠকে।
রবিবার আসন সমঝোতা নিয়ে কলকাতায় বৈঠকে বসেন বাম ও কংগ্রেস উভয় দলের শীর্ষ নেতারা। সেই বৈঠকে দুই দলের আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা হয়। জোটের বৈঠকে বামেদের কাছে ২৯৪ আসনের মধ্যে ১৩০ আসনে লড়ার দাবি জানায় কংগ্রেস। সূত্রের খবর, যে আসনগুলিতে তাঁরা লড়তে চায়, তার একটি তালিকা ওই বৈঠকে পেশ করেন কংগ্রেস নেতারা। কংগ্রেসের ১৩০ আসনের তালিকায় মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার বেশিরভাগ আসন রয়েছে। যা নিয়ে আপত্তি তোলেন বাম নেতারা। তাঁদের দাবি, ওই জেলাগুলিতে বামেদেরও ভোট ব্যাঙ্ক রয়েছে। তাই কিছু আসন কংগ্রেসকে ছাড়তে হবে। এই নিয়েই তরজা শুরু হয় উভয় পক্ষের। জোট সূত্রের খবর, আসন সমঝোতা নিয়ে বামেরা অনড় থাকায় বৈঠক চলাকালীন উত্তেজিত হে পড়েন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী।
পরে সংবাদমাধ্যমের সামনেও অধীরের সেই ক্ষোভ প্রকাশ পায়। সাংবাদিক বৈঠক না করে তিনি চলে যেতে চাইলে, তাঁকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে শান্ত করেন কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। আসন সমঝোতা নিয়ে তরজার কথা অবশ্য সাংবাদিক বৈঠকে এড়িয়ে যান অধীর। তিনি বলেন, শুধু শান্তিপূর্ণ নয়, বন্ধুত্বপূর্ণ ভাবে আমাদের আলোচনা হয়েছে। অনুকূল পরিবেশে একে অপরের সঙ্গে মতামত বিনিময়ের মাধ্যমে আলোচনা হয়েছে। কেউ কারও ওপর চাপিয়ে দেবার বা নির্দেশ দেওয়ার আলোচনা নয়। এই আলোচনা আমাদের উভয়ের মানসিকতাকে একসঙ্গে নিয়ে চলার আলোচনা। এই আলোচনা আরও বেশ কয়েকবার চলবে।" এই মাসের মধ্যেই বাম-কংগ্রেসের আসন বণ্টন সমাপ্ত হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন : ছক্কা হাঁকাতে জানি, ভয় কী!
আরও পড়ুন : তৃণমূলের রাজ্য কমিটির স্টেশনে ঢুকে পড়ল শতাব্দী এক্সপ্রেস
অন্য দিকে, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুও বৈঠকে দু'পক্ষের তরজা নিয়ে মুখ খোলেননি। তিনি শুধু বলেন, "কংগ্রেস সভাপতি যা বলেছেন সেটাই সত্য। এই লড়াইয়ে বাম কংগ্রেসের মধ্যে কোন বোঝাপড়ার অভাব নেই। আসন ভাগাভাগির ব্যাপারে এখনও কোনও নিষ্পত্তি হয়নি। তাতে কোনও তিক্ততাও নেই। এখানে অধীরবাবু এবং আমাদের বিরোধ কাজ করছে না।" এ মাসের মধ্যেই বিধানসভা ভিত্তিক তালিকা তৈরি করে আসন সমঝোতা হবে বলে তিনিও জানান।
এর আগে ৭ জানুয়ারি আসন সমঝোতা নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন বাম ও কংগ্রেস নেতারা। কিন্তু ওই বৈঠকে অধীর উপস্থিত না থাকায় আসন ভাগাভাগি নিয়ে কোনও আলোচনা এগোয়নি। তারপর আজ রবিবার ফের আলোচনায় বসে দুই শিবির। কিন্তু তারপরেও দু'পক্ষের তরজায় আসন ভাগাভাগি নিয়ে কোনও রফাসূত্রে পৌঁছনো সম্ভব হয়নি। জানা গিয়েছে, আগামী ২৫ জানুয়ারি ফের দুই পক্ষ আলোচনায় বসবে। ওই আলোচনার পর ২৮ জানুয়ারি আসন সংখ্যা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানাবে উভয়পক্ষ।