opposition alliance

বিকল্পের আশায় কংগ্রেস, তৃণমূল

বিরোধী জোট গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হতেই বিভিন্ন দলের মধ্যে মতানৈক্য শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে কংগ্রেস বনাম তৃণমূলের সংঘাত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২৩ ০৮:০৬
Share:

—প্রতীকী ছবি।

বিরোধী দলগুলির মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে যে মতভেদ রয়েছে আগামী শুক্রবার পটনায় মহাজোটের বৈঠকে তা মিটিয়ে ফেলা সম্ভব। এমনটাই মনে করে কংগ্রেস এবং তৃণমূল। বঙ্গের শাসকদল সূত্রের বক্তব্য, বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব আলোচনার মাধ্যমে মতপার্থক্য ভুলে ঐকমত্যে পৌঁছনোর চেষ্টা করবেন। কংগ্রেস নেতৃত্বও মনে করেন, সাংবিধানিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে জোট হলে প্রথম ও দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের মতো ২০২৪-এ ‘তৃতীয় ইউপিএ’ সরকার গঠন অসম্ভব নয়।

Advertisement

নির্বাচনে জোট গড়তে হলে পরস্পরকে যে জমি ছাড়তে হয় তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস। দেশের প্রধান বিরোধীদলের একটি সূত্রের বক্তব্য, আঞ্চলিক দলগুলি এক দিকে জোটের কথা বলবে, অন্য দিকে নিজেদের রাজ্যে কংগ্রেসকে ধূলিসাৎ করার চেষ্টা করবে, তা চলতে পারে না। হাত-শিবিরের অভিযোগ, তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেস কর্মীদের উপরে হামলা চালাচ্ছে। অরবিন্দ কেজরীওয়াল কংগ্রেস শাসিত রাজ্যে গিয়ে কংগ্রেসের ভোটে ভাঙন ধরাচ্ছেন। সিপিএম নেতৃত্বাধীন সরকার কেরলে কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের উপরে দমননীতি নিচ্ছে। জোটের স্বার্থে আঞ্চলিক দলগুলি কংগ্রেসকে জমি ছাড়তে বললে, তাঁদেরও কংগ্রেসের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব নিতে হবে।

বিরোধী জোট গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হতেই বিভিন্ন দলের মধ্যে মতানৈক্য শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে কংগ্রেস বনাম তৃণমূলের সংঘাত। আম আদমি পার্টি (আপ) মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে নির্বাচনে লড়ার পরিকল্পনা করছে। যা আখেরে পদ্ম শিবিরকে সুবিধা করে দেবে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের বক্তব্য, প্রতিটি দলের দৃষ্টিভঙ্গি পৃথক, পারস্পরিক বিশ্বাসের ঘাটতি রয়েছে। পটনা বৈঠকে তা মেটাতে উদ্যোগী হবে সকলে। রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘এ ধরনের মতপার্থক্যগুলি দূর করার লক্ষ্যে বৈঠকে বসছেন সব দলের নেতারা।’’ কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারির বক্তব্য, ‘‘পটনার বৈঠক বিকল্পের সন্ধান দেবে। সাংবিধানিক মূল্যবোধকে ভিত্তি করে লড়লে বিরোধী জোট সম্ভব। বিরোধী ঐক্য হলে তৃতীয় ইউপিএ-ও সম্ভব।’’ শুক্রবারের বৈঠকের পরে জুলাইয়ে পূর্ব বা দক্ষিণ ভারতে ফের বৈঠক হবে। সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূলের দুই সংখ্যালঘু নেতা পটনায় যাবেন।

Advertisement

রাজনৈতিক শিবির মনে করছে, আপের রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশে ভোটে লড়ার প্রস্তুতি কেজরীওয়ালের চাপের রাজনীতি। যাতে কংগ্রেসের সঙ্গে আগামী দিনে দর কষাকষিতে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকতে পারে আপ। উল্টো দিকে, দিল্লির আমলাদের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে রাখতে নরেন্দ্র মোদী সরকার যে অধ্যাদেশ দারি করেছে, তা নিয়ে কংগ্রেসও অবস্থান স্পষ্ট না করে দর কষাকষির রাস্তা খোলা রাখতে চাইছে। অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করতে সংসদের আসন্ন বাদল অধিবেশনে বিল আনা হবে। রাজ্যসভায় ম্যাজিক সংখ্যার থেকে বিজেপির সদস্য সংখ্যা অনেকটাই কম। তাই বিরোধীদের একজোট করে শাসক শিবিরকে আটকাতে তৎপর কেজরীওয়াল। অধিকাংশ বিরোধী দল কেজরীকে সমর্থনের আশ্বাস দিলেও, কংগ্রেস এখনও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, অধ্যাদেশের বিরোধিতা করতে বাধা নেই। কিন্তু বিনিময়ে কংগ্রেসের জন্য আপ কী করবে, তা-ও বোঝা দরকার।

রাজ্যসভায় অধ্যাদেশ পাশ করাতে নবীন পট্টনায়কের বিজেডি ও অন্ধ্রের ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সমর্থন প্রয়োজন হবে শাসক শিবিরের। ডেরেকের কথায়, ‘‘ওয়াইএসআর কংগ্রেস বিরোধী অক্ষেই থাকবে বলে মনে হয়। কিন্তু বিজেডি সরকারের পক্ষে ভোট দেবে। নবীন মণিপুরে গির্জা ধ্বংস হলেও নীরব, অথচ তিনি পোপের সঙ্গে ছবি তুলছেন। আসলে বিজেডি ফ্যাসিবাদী আরএসএস-কে সমর্থন করে চলেছে।’’ ডেরেক মনে করেন, অধ্যাদেশ প্রশ্নে মায়াবাতীর দলের সমর্থন পাওয়া কঠিনহবে বিরোধীদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement