পেটে ব্যথায় কষ্ট পাওয়া কিশোরীকে নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান তার দিনমজুর বাবা। সেখানে চিকিৎসা-বিভ্রাটের জেরে সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রীর বাঁ হাত কেটে বাদ দিতে হয় বলে অভিযোগ পরিবারের। পুরুলিয়ার সাঁতুড়ির ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে সোমবার লিখিত অভিযোগ জানিয়ে চিকিৎসার গাফিলতির তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে পরিবারটি। জেলার স্বাস্থ্য-কর্তারা বলেছেন, ‘‘এমন হওয়ার কথা নয়।’’ রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথীর আশ্বাস, ‘‘অভিযোগ পৌঁছলে খতিয়ে দেখব।’’
সাঁতুড়ির মুরাডি গার্লস হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী স্থানীয় ভেটি গ্রামের ফরজানা নাজ (১২)। তার বাবা আব্দুল জানান, পেটে যন্ত্রণা নিয়ে গত ৩০ জানুয়ারি সাঁতুড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান মেয়েকে। এক নার্স তার দু’হাতে ইঞ্জেকশন দেন। ফরজানা বলে, ‘‘আমার বাঁ হাত নীল হতে থাকে। আঙুল বেঁকে যাচ্ছিল। অসহ্য যন্ত্রণা।’’ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওই কিশোরীর বাঁ হাতের ধমনীতে গ্যাসের সমস্যা কমানোর ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। ডান হাতে পেটের ব্যথা কমানোর ওষুধ। পর দিন সকালে ফের মেয়েকে
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান সাদিক। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ঘুরে মেয়েকে নিয়ে সাদিক পৌঁছন কলকাতার এসএসকেএম-এ। সেখানে বলা হয়, হাত বাদ দিতে হবে ফরজানার।
ধার-দেনা করে ফরজানাকে মুম্বই, চেন্নাইয়ের একাধিক নার্সিংহোমে নিয়ে যায় পরিবার। সব ক্ষেত্রেই ডাক্তারেরা হাত বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেন। সাদিকের কথায়, ‘‘ডাক্তারেরা বলেন, ইঞ্জেকশন দেওয়ার ভুলে মেয়ের বাঁ হাতের ধমনী ফেটে গিয়েছে। সেখান থেকে বেরনো রক্তে বিষক্রিয়ায় হাতটা পচতে থাকে।’’ ৬ ফেব্রুয়ারি চেন্নাইয়ের এগমোরে সরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে কনুই থেকে বাদ দেওয়া হয় ফরজানার বাঁ হাত।