বোতলের ছিপিতে জল নিয়ে বালতি ভরতে হবে। একতলা থেকে তেতলা ওঠানামা করতে হবে বারবার।
এই ধরনের র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষা সূত্রের খবর, অর্ঘ্যদেব আদক নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ালিউল্লাহ হস্টেলের এক আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর টোল-ফ্রি নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানান। ইউজিসি-র তরফে খবর পেয়ে তৎপর হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ও। মঙ্গলবার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে ওই হস্টেলে গিয়ে আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকেরা।
‘‘ডেপুটি রেজিস্ট্রার বিষয়টি দেখছেন,’’ বলেন উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়।
অর্ঘ্যদেব আলিপুর ক্যাম্পাসে আধুনিক ইতিহাসে এমএ পড়ছেন। তাঁর বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে। ওই ছাত্র এ দিন জানান, কাঁথির প্রভাতকুমার কলেজ থেকে পাশ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। গত অগস্ট থেকে ওয়ালিউল্লাহ হস্টেলে আছেন। ‘‘প্রথম থেকেই আমাদের র্যাগিং সহ্য করতে হয়েছে। গত ২১ মার্চ আর সহ্য করতে না-পেরে ফোনে ইউজিসি-কে জানাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে ওদের (র্যাগিংয়ে যুক্ত ‘দাদারা’) প্রচণ্ড প্রভাব। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জানানোর সাহস হয়নি,’’ বললেন অর্ঘ্যদেব।
ওই ছাত্র জানান, ২১ তারিখে শরীর ভাল না-লাগায় তাড়াতাড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের আলিপুর ক্যাম্পাস থেকে হস্টেলে ফিরে আসেন তিনি। রোজকার মতো সে-দিনও সিনিয়রদের ঘরে ডাক পড়ে তাঁর। বলা হয়, ‘বোতলের ছিপিতে জল নিয়ে একটি বালতি ভর।’ একটি বালতি ভরার পরে নির্দেশ আসে, আরও তিনটি বালতি ভরতে হবে এ ভাবেই। ওই কাজ শেষ হলে বলা হয়, তেতলা থেকে একতলার এক সিনিয়র দাদার বাবার নাম-ঠিকানা জেনে আসতে হবে। সেটা জেনে আসার পরে বলা হয়, শুধু বাবার নাম-ঠিকানা কেন, মা-দিদার নামও জানতে হবে।
‘‘আমাকে বারবার একতলা থেকে তেতলা এবং তেতলা থেকে একতলা ওঠানামা করতে বাধ্য করানো হয়। তার পরে শুরু হয় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ। শরীর দিচ্ছিল না। বমি করে ফেলি। তার পরেই ইউজিসি-কে জানাই,’’ বললেন অর্ঘ্যদেব।