প্রতীকী ছবি।
অনেক নথিপত্রই এখন রঙিন। ভোটার পরিচয়পত্রই (এপিক) বা পিছিয়ে থাকবে কেন! তাই এ বার রঙিন হতে চলেছে বাংলার ভোটার পরিচয়পত্রও। কোনও সাদামাঠা কাগজে ছাপিয়ে ল্যামিনেশন করা কার্ড নয়। তা হবে একেবারে প্লাস্টিক কার্ড। সেই সঙ্গে পরিচয়পত্রে থাকবে বারকোডও। নির্বাচন কমিশনের ভাষায় পলি ভিনাইল ক্লোরাইড (পিভিসি) কার্ড।
পিভিসি কী? সিন্থেটিক প্লাস্টিক পলিমার। যা ভিনাইল ক্লোরাইডের পলিমারাইজ়েশনের মাধ্যমে তৈরি হয়। ১৬ ডিসেম্বর থেকে আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটার তালিকায় সংযোজন, সংশোধন ও বিয়োজনের কাজ চলবে। খসড়া তালিকা প্রকাশিত হবে ৭ ফেব্রুয়ারি। তার পরে রঙিন প্লাস্টিক কার্ড পাবেন ভোটারেরা।
কিন্তু রঙিন পরিচয়পত্র কেন?
কমিশন-কর্তাদের মতে, এতে বেশ কিছু সুবিধা থাকছে। প্রথমত, প্রযুক্তির সুবিধা। দ্বিতীয়ত, বারকোড ও অদৃশ্য নম্বর থাকায় পরিচয়পত্র আরও বেশি নিরাপদ হচ্ছে। তৃতীয়ত, কমিশনের একটি তথ্যভাণ্ডারে বিষয়টি চলে আসছে। মহারাষ্ট্র, গুজরাত, বিহার, ওড়িশা, অসম, অরুণাচল প্রদেশের মতো অনেক রাজ্যে আগেই রঙিন প্লাস্টিক ভোটার পরিচয়পত্র তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।
বঙ্গে নতুন ভোটার হিসেবে যাঁরা তালিকাভুক্ত হবেন, তাঁরা প্লাস্টিকের রঙিন পরিচয়পত্র পাবেন। কোনও ভোটার যদি তাঁর সাদা-কালো পরিচয়পত্র পাল্টাতে বা তাতে কোনও সংশোধন করতে চান, সাদা-কালো পরিচয়পত্রের বদলে রঙিন প্লাস্টিক ভোটার কার্ড পাবেন তিনিও।
রাজ্যের প্রায় আড়াই কোটি ভোটারের ‘ডব্লিউবি’ সিরিজের ১৬ সংখ্যার পরিচয়পত্র রয়েছে। কোনও ভোটার যদি সেটি সংশোধন করেন, তা হলে তাঁর নতুন পরিচয়পত্রটি হবে ‘স্ট্যান্ডার্ড’ ১০ সংখ্যার।
তা হলে কি পুরনো পরিচয়পত্র বৈধ থাকবে না? কমিশন-কর্তারা জানাচ্ছেন, পুরনোগুলি অবশ্যই বৈধ।
এখনকার ভোটার পরিচয়পত্রে হলোগ্রাম রয়েছে। রঙিন পরিচয়পত্রে তা থাকবে না। তার বদলে সেখানে একটি ‘ইনভিজ়িবল নম্বর’ বা অদৃশ্য নম্বর থাকবে। যা শুধু কমিশনের পক্ষেই দেখা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে পুরনোর মতো নতুন রঙিন পরিচয়পত্রেও থাকবে নাম, সম্পর্ক, লিঙ্গ, বয়স, ঠিকানা ইত্যাদি। প্লাস্টিক পরিচয়পত্রে যে-বারকোড দেওয়া হবে, তাতে ভোটারের যাবতীয় তথ্য থাকবে বলে জানাচ্ছে কমিশন।
এখন ভোটার পরিচয়পত্র তৈরি করে জেলা প্রশাসন। তবে রঙিন প্লাস্টিক পরিচয়পত্র তৈরির সবটুকু দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের হাতে থাকবে না। নির্বাচন কমিশনের লোগো-সহ নিয়মের (নন-পার্সোনালইজ়ড পিভিসি প্রিপ্রিন্ট) কথা ছাপাবে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী
অফিসারের (সিইও) দফতর। তারা সেটি জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠাবে। ব্যক্তিগত (পার্সোনালইজ়ড) তথ্য সেই কার্ডের উপরে ছাপিয়ে দেবে জেলা প্রশাসন। এ বিষয়ে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের কাছে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠিয়েছে সিইও-র দফতর। প্লাস্টিক কার্ডের জন্য ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথা বলছেন ওই
দফতরের কর্তারা।