—ফাইল চিত্র।
মিড-ডে মিলে পড়ুয়াদের পাতে নুন-ভাত! চুঁচুড়ার বালিকা বাণী মন্দিরে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের আচমকা স্কুল-পরিদর্শনে সেই ছবি সামনে আসার পরে তোলপাড় চলছে। তারই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন, মিড-ডে মিলের বিষয়টি তাঁর নজরে রয়েছে। এই প্রকল্পে যাতে কোনও ঘাটতি না হয়, সে জন্য আরও যত্নবান হতে নিয়মিত স্কুল পরিদর্শনের নিদানও দিলেন তিনি।
নুন-ভাতের ঘটনাটি ঘটেছিল হুগলিতে। আর বুধবার দিঘায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, সব স্কুল ও অঙ্গনওয়াড়িতে নিয়মিত পরিদর্শনে যেতে হবে। মিড-ডে মিলে কোনও অনিয়ম হচ্ছে কিনা দেখতে হবে। চেখে দেখতে হবে খাবারের মানও। এ ক্ষেত্রে বিডিও, পুলিশ আধিকারিকদের পাশাপাশি সাংবাদিকদেরও স্কুলে ঘুরে তথ্য জানানোর পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘সাংবাদিকদের কাছেও অনেক খবর থাকে। তাঁরা সেগুলি প্রশাসনিক আধিকারিকদের জানালে, সমস্যার দ্রুত সমাধান করা যাবে।’’
এ দিন বৈঠকের গোড়ার দিকেই নিজে থেকে মিড-ডে মিল প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশ্ন করেন, ‘‘এখানে জেলার স্কুল পরিদর্শক কে আছেন?’’ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের দুই পরিদর্শক উঠে দাঁড়াতেই মুখ্যমন্ত্রীর সটান প্রশ্ন, ‘‘মিড-ডে মিল ‘ক্রস চেক’ করছ?’’ পরে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পার্থ ঘোষ জানান, জেলায় মিড-ডে মিল নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। সরকারি প্রতিনিধিরা নিয়মিত স্কুলে গিয়ে পরিদর্শন করেন। এর পরেই বিডিওদেরও স্কুলে গিয়ে সব দেখে এই সংক্রান্ত তথ্য ডায়েরিতে নথিবদ্ধ করে রাখার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নিজেও যে স্কুলে গিয়ে মিড-ডে মিল ব্যবস্থা খুঁটিয়ে দেখেন, তা-ও জানাতে ভোলেননি মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী মিড-ডে মিল নিয়ে যতই যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দিন না কেন, মিড-ডে মিলের বরাদ্দ তেমন না বাড়ায় তার মান নিয়ে চিন্তিত শিক্ষক সংগঠনগুলি। বর্তমানে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির প্রতি পড়ুয়া পিছু মিড-ডে মিলের বরাদ্দ রয়েছে ৪ টাকা ৪৮ পয়সা এবং ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বরাদ্দ ৬ টাকা ৭১ পয়সা। ওই টাকায় পড়ুয়াদের ভাল খাবার দেওয়া কষ্টকর বলে দাবি সংগঠনগুলির। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অরূপকুমার ভৌমিক বলেন, ‘‘সরকারি ভাবে যে খাদ্য তালিকা দেওয়া হয়েছে, তা বরাদ্দ অর্থে মেনে চলা কষ্টকর। আমরা চাইছি প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মিড-ডে মিলের জন্য বরাদ্দ অর্থ ন্যূনতম সাত টাকা করা হোক।’’