CM Mamata Banerjee and Jindal Power Project

সোমবার শালবনিতে মমতা, জিন্দলদের তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের শিলান্যাস করবেন মুখ্যমন্ত্রী, সঙ্গে থাকছেন সৌরভও

শালবনীতে ৮০০ মেগাওয়াট করে দু’টি কেন্দ্র হবে। এই প্রকল্পে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করছে জিন্দাল গোষ্ঠী। এই প্রকল্পকে ঘিরে পশ্চিম মেদিনীপুরে কয়েক হাজার কর্মসংস্থান হবে বলে আশা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫ ২১:৪১
Share:
(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। (ডান দিকে)

(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।

শালবনিতে জিন্দাল গোষ্ঠীর তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের শিলান্যাস করতে সোমবার শালবনি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে যাচ্ছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। শালবনিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন জিন্দাল গোষ্ঠীর শীর্ষকর্তারাও।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন, ভবিষ্যতের চাহিদাকে মাথায় রেখে শালবনিতে ৮০০ মেগাওয়াট করে দু’টি পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মিত হবে। এই প্রকল্পে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করছে জিন্দাল গোষ্ঠী। পাশাপাশি, ওই সংস্থা একাধিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনাও করেছে। তাই এই প্রকল্প ঘিরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় কয়েক হাজার কর্মসংস্থান হবে বলে দাবি করছে রাজ্য।

এই ঘোষণায় নতুন করে আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন শালবনি এবং পার্শ্ববর্তী প্রায় ৩০টি গ্রামের মানুষ, যাঁরা এক সময় জমি দিয়েছিলেন বড় কারখানার আশায়। বাম আমলে ওই জমিতে একটি বৃহৎ ইস্পাত কারখানা গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হলেও ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর মাওবাদী হামলার পর তা স্থগিত হয়ে যায়। সে দিন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য একটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে শালবনী থেকে মেদিনীপুরে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে তাঁর কনভয়ে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ ঘটায় মাওবাদীরা। ঘটনাচক্রে, সেই কনভয়ে শামিল ছিল কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রী রামবিলাস পাসওয়ানের গাড়িও। এর ফলে সন্ত্রাসের আবহে থেমে যায় শিল্প স্থাপনের প্রক্রিয়া।

Advertisement

২০১১ সালে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৩ সালে শুরু হয় নতুন করে আন্দোলন। আন্দোলনের জেরে অধিগৃহীত জমির একাংশে তৈরি হয় একটি সিমেন্ট কারখানা, যেখানে বর্তমানে কিছু স্থানীয় যুবক কাজের সুযোগ পেয়েছেন। তবে এখনও পড়ে রয়েছে জমির প্রায় ৮০ শতাংশ, যা নিয়ে বড় শিল্পের দাবি জানিয়ে আসছিলেন এলাকাবাসী। তাঁদের দীর্ঘ দিনের দাবি এ বার পূরণ হতে চলেছে বলে মনে করছেন অনেকে। এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের শিলান্যাস শুধু একটি প্রশাসনিক ঘটনা নয়, বরং বহু বছরের প্রতীক্ষিত উন্নয়নের সূচনা বলেই দাবি নবান্নের শীর্ষ আধিকারিকদের। এই প্রকল্প থেকে শুধুমাত্র বিদ্যুৎ নয়, কর্মসংস্থান ও আর্থিক উন্নয়নের এক নতুন দিগন্ত খুলে যেতে পারে জঙ্গলমহলের জন্য। যদিও বর্তমানে মাওবাদীদের প্রভাব নেই বললেই চলে, প্রশাসন কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে আঁটসাঁট নিরাপত্তারও বন্দোবস্ত করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই দফায় দফায় বৈঠক করছে, যাতে সব দিক থেকে প্রস্তুতি সম্পূর্ণ থাকে।

সোমবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে। পরদিন ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার তিনি মেদিনীপুর কলেজ মাঠে সরকারি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন, যেখানে গোয়ালতোড়ের একটি সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট-সহ একাধিক নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। সব মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর জঙ্গলমহলের জন্য বহুমাত্রিক তাৎপর্য বহন করছে— যেখানে পুনরায় জীবন্ত হচ্ছে উন্নয়নের এক থমকে যাওয়া স্বপ্ন। তবে বিরোধী দল বিজেপির তরফে মুখ্যমন্ত্রীর সফরকে কটাক্ষ করা হয়েছে। বলা হয়েছ, এ সবই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রস্তুতির অঙ্গ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement