পাশাপাশি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার রাজভবনে। —নিজস্ব চিত্র।
সংঘাতের আবহেও বজায় থাকল মৌখিক সৌজন্য। প্রজাতন্ত্র দিবসের দু’বেলায় দু’টি অনুষ্ঠানে মুখোমুখি হলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অল্প-বিস্তর কথাও হল দু’জনের। দিনের শেষে রাজ্যপালের মন্তব্য, ‘‘আদানপ্রদান, সে যে ভাবেই হোক না কেন, ইতিবাচক দিকেই এগিয়ে দেয়।’’
প্রজাতন্ত্র দিবসের সকালে রেড রোডের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল ধনখড়। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সৌজন্য বিনিময় হয়। কুচকাওয়াজ দেখে তাঁর খুশির কথা জানান রাজ্যপাল। প্রথামাফিক রাজ্যপালের আমন্ত্রণে রাজভবনে বিকালে ছিল চা-চক্র। সেখানে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। রাজ্যপাল ধনখড় এবং তাঁর স্ত্রী সুদেশের সঙ্গে কথা হয় মুখ্যমন্ত্রীর। সৌজন্যের আলাপচারিতা সূত্রেই রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর ‘কর্মোদ্যোগে’র প্রশংসা করেন। তিনি যে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে চা বা কফি খেতে আগ্রহী, সে কথাও ফের মনে করিয়ে দেন রাজ্যপাল।
তবে মুখ্যমন্ত্রী গেলেও রাজ্যের অন্য কোনও মন্ত্রীকে রবিবার রাজভবনে দেখা যায়নি। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন। কিন্তু রাজ্যপাল বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর সঙ্গে ‘সুসম্পর্ক’ রেখে চলার চেষ্টা করলেও তাঁরা কেউ এ দিন চা-চক্রে যাননি। দু’জনেই অন্যত্র প্রজাতন্ত্র দিবসের একাধিক কর্মসূচিতে ছিলেন। দু’জনেরই বক্তব্য, তাঁরা এই চায়ের আসরে যানও না। এমনকি, কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের প্রথম সারির কোনও মুখও চোখে পড়েনি। ছিলেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং শিল্পপতি-নেতা শিশির বাজোরিয়া।
আরও পড়ুন: সংবিধান রক্ষার ডাক মমতার, পথে বাম-কংগ্রেস
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দলীয় কর্মসূচিতে রয়েছেন উত্তরবঙ্গে। বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায় কলকাতার বাইরে। আর এক সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও দলের কর্মসূচিতে ছিলেন। তাই আমন্ত্রিত হয়েও তাঁরা রাজভবনে যেতে পারেননি।
ধনখড়ের আমলে প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজভবনের সজ্জা ছিল এ বার অন্য রকম। রাজ্যপাল যাতে অভিবাদন নিতে পারেন, তার জন্য রাজভবনের আঙিনায় বেদি গড়া হয়েছিল। যা আগে হতো না। আবার অন্য একটি উঁচু মাচা ছিল সংবাদমাধ্যমের জন্য। সূত্রের খবর, রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ যে ক্যামেরার নজর কাড়বে, তা আগাম আঁচ করেই এই ব্যবস্থাপনা।