মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের নবান্নে বৈঠকে ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে থেকে শুরু হবে ওই বৈঠক। ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেবেন জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকেরাও।
আরজি কর-কাণ্ডের পর একগুচ্ছ পদক্ষেপ করার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। সেই বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, সরকারি হাসপাতালে নিরাপত্তার অভাবের যে সকল অভিযোগ নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারেরা সরব হয়েছেন বৈঠকে আলোচনা হতে পারে সে সব বিষয় নিয়েও।
নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে স্বাস্থ্য দফতরের সর্ব স্তরের আধিকারিকদের যোগদান বাধ্যতামূলক। জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠকে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে এক চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদে ওই দিন থেকে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। পাঁচ দফা দাবি ছিল তাঁদের। তার মধ্যে অন্যতম রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে নিরাপত্তা এবং পরিকাঠামোর উন্নয়ন।
তার পরেই হাসপাতালে নিরাপত্তাজনিত বিষয়ে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রে খবর, হাসপাতালের সুরক্ষা পরিকাঠামো উন্নয়নে নজিরবিহীন পদক্ষেপে দরপত্রের মধ্যেই কাজ শেষের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। বরাদ্দ অর্থ ব্যবহার করে হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, পুরুষ এবং মহিলা চিকিৎসকদের জন্য পৃথক বিশ্রাম কক্ষ, শৌচাগার নির্মাণ ইত্যাদি কাজ করার কথা বলা হয়। সিসি ক্যামেরা বসানোর কথাও বলা হয়।
সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বলও দাবি করেছিলেন, রাজ্যের সব হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর বন্দোবস্ত করছে সরকার। সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া রাজ্য সরকারের সেই আশ্বাস দ্রুত কার্যকর করে দেখাতে চায় নবান্ন। তাই অক্টোবর শুরু হওয়ার আগেই এই বিষয়ে যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে ফেলতে চাইছেন নবান্নের শীর্ষকর্তারা।
দিন কয়েক আগে প্রতিটি জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ অন্য আধিকারিকদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। কোন হাসপাতালে কী কী পরিকাঠামো প্রয়োজন, মূলত সে সব জানতে চাওয়া হয় আধিকারিকদের কাছে। মনে করা হচ্ছে, সেই কাজ কতটা এগোল, এ বার তা খতিয়ে দেখতে চাইছে সরকার।
নবান্নে যে দিন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা গিয়েছিলেন, সেই ১২ সেপ্টেম্বরও রাজ্যের স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে একটি বৈঠক ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। তাতে উপস্থিত থাকার কথা ছিল বেসরকারি হাসপাতালগুলির কর্তৃপক্ষেরও। তবে সেই বৈঠক বাতিল হয়ে যায়। নবান্ন সূত্রে খবর, তার সঙ্গে বৃহস্পতিবারের বৈঠকের কোনও যোগ নেই।