বিধানসভার লবিতে ভাঙচুরের পর।—ফাইল চিত্র।
বিধানসভার লবিতে ভাঙচুর-কাণ্ডে প্রসঙ্গ ১৪ বছর বাদে ফের ফিরে এল বিধানসভায়। বিরোধীদের তোলা অভিযোগের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চ্যালঞ্জ করে বললেন, ভাঙচুর করা তো দূর অস্ত্, বিধানসভার কোনও আসবাবে সে দিন তিনি হাতই দেননি। বিরোধীরা অবশ্য ভিডিয়ো দেখিয়ে পাল্টা দাবি করেছে, মমতা নিজে হাতে না ভাঙলেও তাঁর নেতৃত্বেই বিধানসভায় ভাঙচুর হয়েছিল।
সিঙ্গুর আন্দোলন চলাকালীন ২০০৬ সালের ৩০ নভেম্বর বিধানসভায় আসবাবপত্র ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত হন তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূলের কিছু নেতা ও বিধায়ক। সিঙ্গুরের পথে বাধা পেয়ে সোজা বিধানসভায় এসেছিলেন মমতা। তাঁর উপস্থিতিতেই লবিতে ভাঙচুর চালাতে দেখা যায় তৃণমূলের বেশ কয়েক জন বিধায়ককে। সেই প্রসঙ্গই ফিরে এসেছিল এ দিন।
বিধানসভায় শুক্রবার রাজ্যপালের ভাষণের উপর জবাবি বক্তৃতায় মুখ্যমন্ত্রী যখন বলছিলেন, ‘‘আমি ২৮-৩০ বছর বিরোধী দলের রাজনীতি করেছি। অনেক কিছু করেছি, দেখেছি।’’, তখনই বিরোধী বেঞ্চের দিক থেকে উড়ে আসে মন্তব্য, ‘‘বিধানসভায় ভাঙচুরও করেছেন!’’ সঙ্গে সঙ্গে ক্রুদ্ধ হয়ে মমতা বলেন, ‘‘আমি চ্যালেঞ্জ করছি! আমি যদি কিছুতে হাত দিয়ে থাকি, প্রমাণ করুন। কিছু ভেঙে থাকলে প্রমাণ দিতে হবে। আপনারা সে দিনের ভিডিয়ো দেখে নিন।’’ মমতা জানান, বাম জমানায় সে দিন তাঁকে সিঙ্গুরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সেখান থেকে তিনি এসেছিলেন বিধানসভায় তৎকালীন বিরোধী দলনেতা পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে দেখা করতে। তাঁর পায়ে তখন জুতো ছিল না। তা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। তার পরের ঘটনা প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, তিনি সে দিন বিধানসভার কোনও আসবাবে হাতই দেননি।
বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী এবং কংগ্রেসের সচেতক মনোজ চক্রবর্তী পরে বিধানসভার মিডিয়া সেন্টারে বলেন, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রীর ওই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলাম।’’ বিধানসভার লবিতে ভাঙচুরের ঘটনার ভিডিয়ো দেখিয়ে সুজনবাবু বলেন, ‘‘এখানে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত। ওঁর উপস্থিতিতেই ভাঙচুর হচ্ছে। উনি অস্বীকার করে বলুন, ওই ছবিতে যাঁকে দেখা যাচ্ছে, তিনি উনি নন!’’ মনোজবাবু বলেন, ‘‘আমরা তো বলিনি, উনি হাত দিয়ে ভেঙেছেন। ওঁর উপস্থিতিতেই গোটা ঘটনা ঘটেছিল।’’