প্রত্যাশা ছিলই। তাতেই সিলমোহর পড়ল মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায়। বারাসত এবং বসিরহাটকে পৃথক ‘পুলিশ জেলা’ করা হবে বলে মঙ্গলবার বারাসতে প্রশাসনিক সভায় এসে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
কামদুনি কাণ্ডের পরে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে বারাসত থানাকে ভেঙে আরও তিনটি থানা করা হয়। বারাসত ছাড়াও তৈরি হয় শাসন, মধ্যমগ্রাম এবং দত্তপুকুর থানা। এ বার উত্তর ২৪ পরগনা ভেঙে বারাসতকে ‘পুলিশ জেলা’ হিসাবেই ঘোষণা করলেন মমতা। তাতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করছেন শহরবাসী। ‘তরুণ পুলিশ সুপার’দের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে সে আশার কথা নিজেও জানিয়েছেন মমতা।
বসিরহাটকে ‘স্বাস্থ্য জেলা’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল আগেই। ‘পুলিশ জেলা’ হিসাবে ঘোষণা করা হবে বসিরহাটকে, এমন প্রত্যাশাও তৈরি হয় মানুষের মনে। নদী-জঙ্গলে ঘেরা বহু এলাকা আছে এই মহকুমায়। স্থলপথ এবং জলপথে মাইলের পর মাইল এলাকা বাংলাদেশ সীমান্ত-লাগোয়া। সে সব জায়গা দিয়ে পাচারের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। ঘোজাডাঙায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বন্দর আছে। সেখানেও আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। ‘পুলিশ জেলা’ হলে এই সব এলাকায় অপরাধ দমনে সুবিধা হবে বলে মনে করছেন পুলিশ কর্তারা। কয়েক মাস আগে বাদুড়িয়ায় দুই গোষ্ঠীর গোলমালের আঁচ মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে যে ভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল, ‘পুলিশ জেলা’ তৈরি করে পরিকাঠামো ঢেলে সাজার প্রয়োজনীয়তার দাবি তাতে জোরদার হয়।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গিতে প্রশাসনের দায়িত্ব আছে: মমতা
কিন্তু বছর দু’য়েক আগে জনসভায় এসে মুখ্যমন্ত্রী ‘বসিরহাট জেলা’ হবে বলেও ঘোষণা করে গিয়েছিলেন। তা নিয়ে শুরুর দিকে তৎপরতা দেখা গেলেও আপাতত তেমনটা চোখে পড়ে না। প্রশাসনিক ভাবে জেলাকে ভাগ না করে বসিরহাটকে ‘পুলিশ জেলা’ হিসাবে তৈরির অগ্রাধিকার কেন দিলেন মমতা?
জেলা তৃণমূলের একটি অংশের ব্যাখ্যা, প্রশাসনিক ভাবে জেলা তৈরি হলে পৃথক জেলা পরিষদও হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে বসিরহাট জেলা পরিষদ গঠন হলে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য হাতে নেই ঘাসফুল শিবিরের। তাই পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলা ভাগের পরিকল্পনা নিয়ে উচ্চবাচ্য করলেন না মুখ্যমন্ত্রী।