বিটকয়েন কেনাবেচা শেখাতে ক্লাস শহরে

বিটকয়েন দিয়ে আয়ের পথ দেখাতে বিজ্ঞাপন দিয়েছে এন্টালির একটি সংস্থা। বিজ্ঞাপনে উল্লিখিত নম্বরে ফোন করে জানা গেল, ১৬০০ টাকার বিনিময়ে পাঁচ সপ্তাহে ১০টি ক্লাসেই শিখিয়ে দেওয়া হবে বিটকয়েন নিয়ে যাবতীয় কারিকুরি।

Advertisement

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৫
Share:

কেন্দ্রীয় বাজেটে বিটকয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সি নিষিদ্ধ করার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। কিন্তু সেই ঘোষণাকে আমল না-দিয়ে দিব্যি কেনাবেচা চলছে এই ‘বায়বীয় মুদ্রা’র। শুধু তা-ই নয়, বিটকয়েন কেনাবেচা করে আয়ের পথ দেখাতে শিক্ষা কেন্দ্রও খুলে বসেছেন অনেকে।

Advertisement

যেমন বিটকয়েন দিয়ে আয়ের পথ দেখাতে বিজ্ঞাপন দিয়েছে এন্টালির একটি সংস্থা। বিজ্ঞাপনে উল্লিখিত নম্বরে ফোন করে জানা গেল, ১৬০০ টাকার বিনিময়ে পাঁচ সপ্তাহে ১০টি ক্লাসেই শিখিয়ে দেওয়া হবে বিটকয়েন নিয়ে যাবতীয় কারিকুরি। এবং তার পরেই নাকি খুলে যাবে ‘আলিবাবার গুহা’! ফোনের ও-পারে থাকা মহিলার দাবি, গত সেপ্টেম্বর থেকে অনেকেই নাকি তাঁদের কাছে এই বিদ্যে শিখে প্রচুর আয় করছেন। কী ভাবে? তা বলতে রাজি নন তিনি। বললেন, ‘‘আমরা প্রত্যেককে আলাদা আলাদা ভাবে শেখাই। ফোনে এ-সব বলা যাবে না।’’ শুধু ওই সংস্থা নয়, নেট-দুনিয়ায় কলকাতায় বিটকয়েন কেনাবেচার আরও কয়েকটি সংস্থা রয়েছে। কিন্তু তারা এই বিদ্যে শেখায় কি না, সেটা স্পষ্ট নয়।

এই পরিস্থিতিতেই কেন্দ্রীয় বাজেটে অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা, কেন্দ্র বিটকয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সি নিষিদ্ধ করার পথে এগোবে। বিটকয়েন কেনাবেচা নিয়ে বারবার সতর্ক করে দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কও। কিন্তু এন্টালির ওই সংস্থার দাবি, ‘‘ও-সব ভুল কথা। সরকার বিটকয়েন থেকে কর নিয়ে এটাকে আইনসম্মত করে দেবে।’’

Advertisement

সরকার বিটকয়েনের লেনদেন আইনসম্মত করে দেবে, এই দাবি শুনে তাজ্জব লালবাজারের এক কর্তাও। তিনি বলেন, ‘‘বিটকয়েন এখনও আইনি নয়। আবার পুরোপুরি বেআইনিও ঘোষণা করা হয়নি। ফলে বিটকয়েন কেনাবেচা করলে বা এর লেনদেন শেখালে আইনি পদক্ষেপ করার জায়গা জোরালো নয়। তবে এই বিষয়ে সচেতনতা প্রচার করছে আমাদের সাইবার শাখা।’’

বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ, বিটকয়েনের কোনও নিয়ন্ত্রক সংস্থা না-থাকায় নেট-দুনিয়ার বেনামি লোকেরা ইচ্ছেমতো এই মুদ্রা ছেড়ে দিচ্ছে। তার দেদার কেনাবেচা চলছে। কোন সূচক ধরে দাম চড়ছে বা পড়ছে, তার হিসেব থাকছে না। মূলত অপরাধমূলক লেনদেনেই এর ব্যবহার বেশি। গত বছর যে-‘ওয়াননা ক্রাই’ র‌্যানসমঅয়্যার তাব়়ড় তাব়়ড় দেশকে কাঁদিয়ে ছেড়েছিল, তার পিছনে থাকা দুষ্কৃতীরাও মুক্তিপণ চেয়েছিল এই বিটকয়েনেই।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমীক্ষা বলছে, এত দিন চিনেই সব থেকে বেশি বিটকয়েন তৈরি হত। কিন্তু সেই চিনই নিষিদ্ধ করেছে বিটকয়েনের ব্যবহার। অথচ এ দেশে আইনের ফাঁক গলে এখনও তার কেনাবেচা জারি রয়েছে। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের একটি সূত্র বলছে, কী ভাবে বিটকয়েন নিষিদ্ধ করা যায়, তার রাস্তা খোঁজার জন্য অর্থ সংক্রান্ত বিষয়ের সচিবের অধীনে একটি কমিটি গড়ে দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement