সোমবার এসএসসি চাকরি বাতিল মামলা শুনবে সুপ্রিম কোর্ট। — গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
২৫,৭৫৩ স্কুল শিক্ষকের চাকরি বাতিলের কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই মামলার শুনানির দিনক্ষণ জানিয়ে দিল শীর্ষ আদালত। শনিবার সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানানো হয়, আগামী সোমবার (২৯ এপ্রিল) এসএসসির প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলা শুনবে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চই শুনবে এই মামলা।
হাই কোর্টের চাকরি বাতিলের রায়ের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য সরকার। বুধবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে রাজ্যের শিক্ষা দফতর, এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সেই মামলার শুনানি শুরু হচ্ছে আগামী সোমবার থেকে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ শুনবে এই মামলা। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে থাকবেন বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র। সূত্রের খবর, সোমবার বেলা ১২টা নাগাদ দেশের শীর্ষ আদালতে এই মামলার শুনানি শুরু হতে পারে।
প্রসঙ্গত, মামলা দায়েরের পর সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছিল, মামলার শুনানির দিন স্থির হয়েছে আগামী ৩ মে। কিন্তু কোন বিচারপতির বেঞ্চ সেই মামলা শুনবে তা জানানো হয়নি। মামলাকারী পক্ষ চেয়েছিল, মামলার শুনানি যেন হয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চেই। শনিবার দেখা গেল, এগিয়ে এসেছে মামলার শুনানির দিন। সোমবার বেলা ১২টা থেকেই শুনানি শুরু হবে বলে শীর্ষ আদালত সূত্রে খবর।
গত সোমবার এসএসসির নিয়োগে ‘দুর্নীতি’র মামলায় রায় ঘোষণা করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের নিয়োগের প্রক্রিয়া বাতিল ঘোষণা করে। এতে চাকরি হারান ২৫,৭৫৩ জন। যাঁরা মেয়াদ-উত্তীর্ণ প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন, যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে ১২ শতাংশ হারে সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে বলা হয়েছে ওই চাকরিপ্রাপকদের। হাই কোর্ট জানায়, এসএসসি দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগগুলি নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাবে সিবিআই। প্রয়োজনে তারা সন্দেহভাজনদের হেফাজতে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। অভিযোগ ছিল, অযোগ্যদের চাকরি দেওয়ার জন্য বাড়তি পদ তৈরি করা হয়েছিল এসএসসিতে। সেই পদ তৈরির অনুমোদন দিয়েছিল খোদ মন্ত্রিসভা। সোমবারের রায়ে আদালত জানায়, সিবিআই চাইলে মন্ত্রিসভার সদস্যদেরও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। হাই কোর্টের এই রায়ের খবর প্রকাশ্যে আসতে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে চাকরিহারাদের মধ্যে। তাঁদেরও প্রশ্ন, কয়েক জনের দুর্নীতির জন্য সকলের চাকরি কেন বাতিল করা হবে? বিক্ষোভ দেখাতে রাস্তায় নেমেছেন তাঁরাও। এ বার সেই মামলাই পৌঁছে গেল দেশের শীর্ষ আদালতে।