আইএসসি বা দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষার প্র্যাক্টিক্যাল কবে থেকে হবে, তার সূচি ঘোষণা করল সিআইএসসিই বোর্ড। —ফাইল চিত্র।
আগামী বছরের আইএসসি বা দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষার প্র্যাক্টিক্যাল কবে থেকে হবে, তার সূচি ঘোষণা করল সিআইএসসিই বোর্ড। সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানিয়েছে, পয়লা অক্টোবর, ২০২৩ থেকে আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে প্র্যাক্টিক্যাল নেওয়া শেষ করতে হবে। কী ভাবে এই পরীক্ষা নিতে হবে, তার নির্দেশিকাও দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষার পরে যত শীঘ্র সম্ভব তার নম্বর সিআইএসসিই বোর্ডের পোর্টালে আপলোড করতে হবে। নম্বর আপলোড করার শেষ তারিখ ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪। প্রসঙ্গত, সিআইএসসিই বোর্ডের অধীনস্থ স্কুলগুলিতে বিজ্ঞানের বিষয়গুলিতে প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা এবং বাকি বিষয়গুলির ক্ষেত্রে প্রজেক্ট ওয়ার্ক জমা দিতে হয়। প্রজেক্টের নম্বরও আপলোড করতে হবে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে, এমনটাই জানিয়েছে বোর্ড।
সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির অধ্যক্ষেরা মনে করছেন, আগামী বছর আইসিএসই এবং আইএসসি-র লিখিত পরীক্ষা কিছুটা আগে শুরু হতে পারে। পরীক্ষার বিস্তারিত সূচি এখনও না দিলেও সিবিএসই বোর্ড ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, তাদের দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হবে ১৫ ফেব্রুয়ারি। যা অন্য বারের থেকে কিছুটা এগিয়ে আনা হয়েছে। শিক্ষকদের অনুমান, আগামী বছর লোকসভা ভোটের কথা ভেবেই পরীক্ষার সূচি এগিয়ে আনা হয়েছে।
সিআইএসসিই বোর্ডের অধীনস্থ কয়েকটি স্কুলের অধ্যক্ষেরা জানান, সাধারণত সিবিএসই বোর্ডের লিখিত পরীক্ষা শুরুর সামান্য আগে-পরে তাঁদের বোর্ডের স্কুলগুলির লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়। ভোটের জন্য সিবিএসই বোর্ডের পরীক্ষা এগোলে সিআইএসসিই বোর্ডও তাদের পরীক্ষা কিছু দিন এগোতে পারে। চলতি বছরে আইসিএসই এবং আইএসসি, দু’টি পরীক্ষাই শুরু হয়েছিল ফেব্রুয়ারির শেষে। আগামী বার মাধ্যমিক খানিকটা এগিয়ে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শুরু হচ্ছে। উচ্চ মাধ্যমিকও এগিয়ে আনা হয়েছে দিন পনেরো। তা শুরু হচ্ছে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি।
সিআইএসসিই বোর্ড আরও জানিয়েছে, স্কুলগুলি প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা নিলেও তার মূল্যায়ন করবেন অন্য স্কুলের শিক্ষকেরা। পরীক্ষার আগে সংশ্লিষ্ট স্কুলে এসে তাঁদের সেখানকার পড়ুয়া-সংখ্যা এবং সেই স্কুলের প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষার ল্যাবরেটরি কত বড়, তা দেখে যেতে হবে। সেই অনুযায়ী পরীক্ষার্থীদের একাধিক দলে ভাগ করে ভিন্ন ভিন্ন দিনে প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা নিতে হবে। কবে, কোন দলের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা, তার সূচিও আগেই জানিয়ে দিতে হবে।
সিআইএসসিই বোর্ডের অধীনস্থ স্কুলগুলির অধ্যক্ষেরা জানাচ্ছেন, এত আগে থেকে প্র্যাক্টিক্যাল শুরু হওয়ায় স্কুলগুলি ধীরেসুস্থে পরীক্ষা নিতে পারবে। উল্লেখ্য, করোনার সময়ে যে বছরে প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা হয়েছিল, সেই সময়ে কত জন একসঙ্গে পরীক্ষা দিতে পারবে, তা নিয়ে নানা বিধিনিষেধ ছিল। গত বছরও করোনা সংক্রান্ত কিছু বিধিনিষেধ মানার নির্দেশ দিয়েছিল বোর্ড। এ বার অবশ্য তারা তেমন বিধিনিষেধের কথা এখনও পর্যন্ত জানায়নি।
বিভিন্ন স্কুলের অধ্যক্ষেরা জানাচ্ছেন, শুধু প্র্যাক্টিক্যালই নয়, আগামী বছরের পরীক্ষা সংক্রান্ত সব ধরনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। ন্যাশনাল ইংলিশ স্কুলের অধ্যক্ষা মৌসুমী সাহা জানাচ্ছেন, আগামী বছরের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কী ধাঁচের হবে, সেই সম্পর্কে শিক্ষকদের নিয়ে ওয়েবিনারের আয়োজন করেছে বোর্ড। পাশাপাশি, বিষয়ভিত্তিক ওয়েবিনারেও শিক্ষকদের সঙ্গে প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। সিআইএসসিই বোর্ডের প্রাক্তন চিফ এগ্জিকিউটিভ জেরি অ্যারাথুন আগেই জানিয়েছিলেন, জাতীয় শিক্ষানীতির উপরে ভিত্তি করে পরীক্ষার প্রশ্নের ধরনে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। রামমোহন মিশন হাইস্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘মাল্টিপল চয়েস (এমসিকিউ) প্রশ্ন তো থাকছেই। সেই সঙ্গে মুখস্থ বিদ্যার বদলে ছাত্রছাত্রীরা যাতে যুক্তি দিয়ে বিশ্লেষণ করে উত্তর লিখতে পারে, সে দিকেও বিশেষ ভাবে লক্ষ রাখা হবে। প্রশ্নের ধরন পরীক্ষার্থীদের আগেই বলা হয়েছে। পরীক্ষার আগে আরও এক বার বলে দেওয়া হবে।’’