এক জন রীতিমত মেরিন কমান্ডো’র প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, নাম বীরবজরংবলি পাণ্ডে। আর এক জন নিছকই অটো চালক রিশু দত্ত। বুধবার সন্ধ্যায় দু’জনেই জীবন বাজি রেখে বাগডোগরার গদাধরপল্লিতে ৭ বছরের এক শিশুকে ১০০ মিটার ঢাকা নর্দমার ভিতর থেকে উদ্ধার করে এখন আলোচনার কেন্দ্রে।
হুগলির বাসিন্দা, সিআইএসএফ কনস্টেবল বিবি পাণ্ডে দু’মাস আগে বাগডোগরা বিমানবন্দরে বদলি হয়ে এসেছেন। থাকেন গদাধরপল্লিরই ইউনিট লাইনে। রিশুবাবুর বাড়িও পাশেই। বুধবার ওই শিশু বিশালকে তলিয়ে যেতে দেখে সেকেন্ড দেরি না করে ঝাঁপিয়ে পড়েন দু’জনেই। দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া ছোট্ট বিশালের সঙ্গে রিশুবাবুও হাঁসফাঁস করছিলেন। কিন্ত বিবি পান্ডের কমান্ডো প্রশিক্ষণ বাঁচিয়ে দেয় দু’জনকে। বুধবার ভোর থেকে অবিরাম বৃষ্টিতে শিলিগুড়ি-সহ জল, ধসে বিধ্বস্ত ছিল গোটা জেলা। বাড়ির সামনে জমা জলে খেলতে গিয়ে হঠাৎই ঢাকা নর্দমার ভাঙা অংশ দিয়ে তলিয়ে যায় বিশাল। দেখামাত্র জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন রিশু। ততক্ষণে জলের স্রোতে বিশাল ঢুকে যায় নর্দমার প্রায় ৩০-৪০ ফুট ভিতরে। তখন জলে ঝাঁপিয়ে পড়েন পাণ্ডেও।
রিশুবাবু বলেন, ‘‘কোনওক্রমে বাচ্চাটার পা ধরে টেনে সামনে দিকে আনার চেষ্টা করি। সেই সময় ওই কনস্টেবল না থাকলে হয়ত অন্যরকম কিছু হয়ে যেত।’’ আর পাণ্ডে জানান, মেরিন কমান্ডোর প্রশিক্ষণের কায়দাকে কাজে লাগিয়ে সাঁতরে এগিয়ে যেতেই দেখেন রিশু শিশুটিকে সামনে ঠেলার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ‘‘তখনই ওকে ধরে বুকের উপরে তুলে নিই।
পিছন ঘুরতেই দেখি, রিশু প্রায় নিস্তেজ হয়ে পড়ছে। ওঁকে আমার পা ধরতে বলি। কয়েক দফার চেষ্টায় তা সম্ভব হয়। প্রশিক্ষণটা কোথাও তো কাজে আসল।’