বন্দে ভারতে পাথর ছোড়া নিয়ে মমতার তোপের মুখে বিজেপি। ফাইল চিত্র।
বন্দে ভারত ট্রেনে পাথর ছোড়ার অভিযোগ উঠেছিল পশ্চিমবঙ্গে। তা নিয়ে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন রাজ্যের বিজেপি নেতারা। বন্দে ভারতে পাথর ছোড়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবারই প্রকাশ্যে এসেছে একটি নতুন তথ্য। যা জানিয়েছেন খোদ রেল কর্তৃপক্ষই। পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পাথর ছোড়ার ঘটনাটি ঘটেছে বিহারে। তারপরেই বিজেপির বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী-সহ তৃণমূলের নেতারা। বৃহস্পতিবার গঙ্গাসাগর থেকে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন মমতা। সেখানেই বন্দে ভারত নিয়ে ভুল প্রচার করায় বিজেপিকে আক্রমণ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, ‘‘বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম তিন দিন ধরে বিষয়টি প্রচার করেছে আমাদের বিরুদ্ধে। ফেক নিউজ় দেখিয়েছে। বাংলাকে অসম্মান করার চেষ্টা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইন আইনের পথে চলবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ঘটনাটি বাংলায় ঘটেনি, ঘটেছে বিহারে। বিহারের মানুষের ক্ষোভ থাকতেই পারে। গণতন্ত্রে মানুষের ক্ষোভ থাকতেই পারে। তা বলে বিহারকে অপমান করলে চলবে না। আমি মনে করি তাদেরও পাওয়ার অধিকার রয়েছে। বিহারে বিজেপি নেই বলে তারা পাবে না কেন?’’
মমতা বলেছেন, ‘‘বন্দে ভারত কী? পুরোনো ট্রেনকে রং করে করে দিয়েছে। ইঞ্জিনটা ছাড়া সবই অনেক পুরনো রেক এখান থেকে উইথড্র করে নেওয়া হয়েছে। আমার সময় বছরে অন্তত ১০০টি করে ট্রেন দিতাম। শেষ ১১ বছরে একটাও নতুন ট্রেন দেওয়া হয়নি। এই একটা ছাড়া।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বাংলার নাম করে বদনাম করা যাদের কাজ, তাদের আমি তীব্র নিন্দা করছি। সংবাদমাধ্যমকে বলব, ফেক নিউজ় করা বন্ধ করুন।’’
বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে মমতা বলেছেন, ‘‘যাদের কোনও কাজ নেই, তারাই এমনটা করে। তাদের কিছু তো করতে হবে। নিজেদের নেতিবাচক মনোভাব সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে চাইছে। নিজেদের অস্বিত্বরক্ষার লড়াই করতে হচ্ছে। আমি তাদের বলব হতাশায় ভুগবে না। আর আমি সব সময় কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয় করে কাজ করার পক্ষপাতী।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কেন্দ্র-রাজ্য মিলেমিশে কাজ করবে। তাই আমরা বলতে চাই, কারও একচেটিয়া আধিপত্য নেই। গণতন্ত্রে এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।’’
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার পূর্বরেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী জানান, বন্দে ভারতে পাথর ছোড়ার বিষয়ে তাঁদের হাতে কিছু তথ্য হাতে এসেছে। ট্রেনে লাগানো সিসি ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে, বন্দে ভারতে যখন পাথর ছোড়া হয়েছে তখন সেটি যাচ্ছিল বিহারের মধ্যে দিয়ে। এমনকি, ট্রেনের পাশে বেশ কয়েক জনকে দাঁড়িয়েও থাকতে দেখা যায়। একলব্য জানান, তাঁরা প্রাথমিক ভাবে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, ওই এলাকাটি বিহারে। ফলে বাংলা থেকে বন্দে ভারতে পাথর ছোড়া হয়নি বলেই মনে হচ্ছে।
কিন্তু বন্দে ভারত ট্রেনে পাথর ছোড়ার ঘটনায় প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপি নেতারা রাজ্য সরকার ও শাসকদল তৃণমূলের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিল। সঙ্গে যে ভাবে নতুন ট্রেনের ওপর হামলা হয়েছে তা নিয়েও কাঠগড়ায় তোলা হয় রাজ্য প্রশাসনকে। কিন্তু রেলের বয়ান প্রকাশ্যে আসায় বিজেপি নেতাদের পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূল।