ছবি: প্রতিনিধিত্বমূলক।
রাজ্যে ডেঙ্গি নিয়ে ক্রমেই বাড়ছে উদ্বেগ। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুও হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বৃহস্পতিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য-সহ বিভিন্ন দফতর এবং জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। চলতি বর্ষার মরসুমে ডেঙ্গি মোকাবিলায় প্রশাসন কতটা প্রস্তুত, তা খতিয়ে দেখা হয়। প্রশাসনের একেবারে শীর্ষ থেকে ব্লক স্তরের মধ্যে সমন্বয়ের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হয়েছে বৈঠকে। পাশাপাশি, ডেঙ্গি মোকাবিলা এবং চিকিৎসার জন্য কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে এবং কী পদক্ষেপ করা হবে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।
ডেঙ্গি রুখতে কী কী পদক্ষেপ—
কোথায় মশা বংশবৃদ্ধি করছে তা দেখার জন্য ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালানো হচ্ছে সমস্ত পুরএলাকায়।
ডেঙ্গি প্রতিরোধে ১২ জুন থেকে বাড়ি বাড়ি ঘুরে নজরদারি শুরু হয়েছে। চলবে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
জুলাই থেকে শুরু হয়েছে মশা নাশের পদক্ষেপ। চলবে ডিসেম্বর পর্যন্ত।
ডেঙ্গিবাহিত মশার লার্ভা বিনাশের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেবে, এমন দল তৈরি করা হয়েছে।
বাড়ি বাড়ি ঘুরে পর্যবেক্ষণ এবং মশা বিনাশের জন্য ১৫ জনের দল তৈরি করা হয়েছে। ৩,১৯৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ঘুরবে সেই দল।
মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধের জন্য সারা রাজ্যে ১,৩২,২২০ জনকে নিযুক্ত করা হয়েছে।
সব জেলায় মশা ধ্বংসকারী রাসায়নিক সরবরাহ করা হয়েছে।
মশার লার্ভা ভক্ষণকারী ৭৫ লক্ষ মাছ সব জেলায় সরবরাহ করা হয়েছে। আগামী ৩০ দিনে আরও ২.২৫ কোটি মাছ সরবরাহ করা হবে।
১,৫০০ কিলোমিটার খাল সাফাই করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
১৬০টি সরকারি কেন্দ্রে বিনা খরচে ডেঙ্গি পরীক্ষা হচ্ছে।
৯০০০ চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীকে ডেঙ্গি রোগীর চিকিৎসার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
আশা কর্মী এবং অন্য কর্মীদের ডেঙ্গি মোকাবিলার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
যে সব হাসপাতালে ডেঙ্গি রোগীর ভর্তির সংখ্যা বেশি, সেখানে ২৪ ঘণ্টার জন্য আলাদা জ্বরের ক্লিনিক খোলা হয়েছে।
সমস্ত ব্লক, পুরসভায় ঘুরে আগাম সতর্ক করবেন পতঙ্গবিদেরা।
যে সব হাসপাতালে ডেঙ্গি রোগী ভর্তি হচ্ছেন বেশি, সেখানে ঘুরে দেখবে ডেঙ্গি পরিদর্শক দল।
ডেঙ্গি রোগীর ভর্তির প্রয়োজন বৃদ্ধি পেলে সেই পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে হাসপাতালগুলিকে।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে স্থির হয়েছে—
ডেঙ্গি মোকাবিলায়, বিশেষত গ্রামাঞ্চলে ডেঙ্গি পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং পর্যবেক্ষণে নিযুক্ত করা হবে বিভিন্ন দফতরের সরকারি কর্মীদের।
অগস্ট থেকে প্রতি মাসে দু’বার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ পালন করা হবে।
শহর এবং শহরতলিতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলবে। সংগ্রহ করা হবে বর্জ্য।
রেল, বন্দর, প্রতিরক্ষা-সহ সমস্ত শিল্পকেন্দ্রকে তাদের অধীনে থাকা এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
অগস্ট থেকে স্কুল-সহ বিভিন্ন জায়গায় ডেঙ্গি নিয়ে সতর্কতা অভিযান চলবে।
দু’দিনের বেশি কারও জ্বর থাকলে তাঁর ডেঙ্গি পরীক্ষা করানোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
যেখানে বেশি ডেঙ্গি হচ্ছে সেই সব জায়গায় এক লক্ষ মশারি বিলি করা হবে।
ডেঙ্গি প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত পর্যালোচনা বৈঠকে বসবেন জেলাশাসকেরা।