টালা সেতু উদ্বোধনে মমতা।
করোনা তো বটেই। পুরনো সেতুটি ভাঙতেও কিছুটা বেশি সময় নিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ। পুজোর আগে উত্তর কলকাতাবাসীকে নতুন টালা সেতু ‘উপহার’ দিয়ে এ কথাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, রেল টালা সেতু ভাঙতে মাস চারেক সময় নেওয়ার পরেও সেতু নির্মাণের কাজ তাড়াতাড়িই শেষ হয়েছে। তার জন্য রাজ্যের পুরমন্ত্রী ববি হাকিম, যুবকল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং পূর্তমন্ত্রী পুলক রায়কে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ধন্যবাদও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
যানবাহন চলাচলের জন্য বিপজ্জনক হয়ে পড়ায় ২০১৯ সালে পুজোর ঠিক আগে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল টালা সেতু। তার পর পুরনো সেতু ভাঙার কাজ শুরু হয়। নতুন সেতু নির্মাণের কাজ চালু হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে। বৃহস্পতিবার সেই সেতু উদ্বোধন করে মমতা বলেন, ‘‘সেতু গড়ার আগে পুরনো সেতু ভাঙতে হয়েছে আমাদের। তার জন্য চার মাস সময় নিয়েছে রেল। তার পরেও অনেক তাড়াতাড়িই কাজটা শেষ হয়ে গিয়েছে। এটা ঠিক যে, কোভিডের জন্যেও আমাদের কিছু সমস্যা হয়েছে। তবে অরূপ, ববি, পুলক এঁরা অনেক সাহায্য করেছে।’’ স্থানীয়দের ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ‘‘এলাকাবাসীকেও বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ। আমি শুনেছি, স্থানীয়দের ফুটপাথ, সিঁড়ি, সার্ভিস রোড নিয়ে কিছু সমস্যা রয়েছে। আমি পিডব্লুডিকে বলব, ব্যাপারটা দেখে নিতে। যাতে দু’-তিন মাসের মধ্যে সমস্যা মিটে যায়।’’
টালা সেতু নির্মাণে খরচের ভার রাজ্য সরকারকেই বহন করতে হয়েছে বলেন জানান মমতা। সেতু তৈরিতে রাজ্যের ৫০৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে জানিয়ে খানিক অনুযোগের সুরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি ভেবেছিলাম, রেল হয়তো সোশ্যাল ওয়ার্ক (সামাজিক কাজ) হিসাবে ছাড় দেবে। কিন্তু ব্রিজ ভাঙার জন্যেও রেলকে টাকা দিতে হয়েছে আমাদের। প্রায় ৯০ কোটি টাকা রেলকে দিয়েছি। পুরো টাকাই রাজ্য সরকার দিয়েছে।’’
গ্রাফিক— সনৎ সিংহ
টালা সেতু খুলে যাওয়ায় বরাহনগর বা সিঁথির মোড় থেকে উত্তর কলকাতায় আসতে এখন আর বেলগাছিয়া ব্রিজের যানজট পেরোতে হবে না। পুজোর আগে টালা সেতু খুলে যাওয়ার ফলে যানজটের ভোগান্তি কমবে বলেই মনে করা হচ্ছে। মমতা জানান, আগের সেতুর চেয়ে নতুন সেতু অনেক চওড়া। দু’লেনের জায়গায় নতুন সেতুটি চার লেনের করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী কথায়, ‘‘আগের ব্রিজের চেয়ে এটা অনেক চওড়া। আগেরটা ছিল দু’লেনের। এটা চার লেনের। ভারবহনের ক্ষমতাও বেশি। দৈর্ঘ্য প্রায় ৭৫০ মিটার। চিৎপুর র্যাম্পের দৈর্ঘ্য ৩০০ মিটার।’’ তবে প্রথম দিকে সেতু যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে কিছু নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে জানান মমতা। তিনি বলেন, ‘‘সেতুতে এখনও বড় গাড়ি চলবে না। ছোট গাড়িই চলবে। আগামী কয়েক দিনের জন্য। সিস্টেম মেনটেন করার জন্য।’’