নেত্রী মমতার নির্দেশ পেলেই ফের লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিলেন দেব। ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা দেব জানিয়েছিলেন, তিনি আর লোকসভা ভোটে প্রার্থী হতে চান না। কিন্তু বুধবার কালীঘাটের বাসভবনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যে বৈঠকে বসেছিল তাতে তাঁর ফের লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া গেল। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা কমিটির বৈঠকে সাংসদ হিসেবে হাজির হয়েছিলেন অভিনেতা দীপক অধিকারী দেব। সেখানেই তাঁকে ফের ঘাটালে প্রার্থী করার ইঙ্গিত দিয়েই দিলেন স্বয়ং মমতা। আর দলনেত্রীর নির্দেশ থাকলে তিনিও যে ফের লোকসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রস্তুত, পাল্টা সেই ইঙ্গিত দিলেন দেবও।
বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূলের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘বৈঠকে দিদি ঘাটালের নেতাদের দেবকে নিয়ে বেশকিছু কথা বলেছেন, তাতেই আমরা বুঝেছি যে আগামী লোকসভা ভোটে আবারও দেবই প্রার্থী হবেন। সাংসদ হিসেবে কাজ করতে গিয়ে দলের যে সব নেতার সঙ্গে দেবের সমস্যা হচ্ছিল, তাদেরই দিদি যা বলা বলে দিয়েছেন। সেইসব শুনে দেবও দিদির কথা মেনে নেবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন।’’ প্রসঙ্গত ঘাটালের প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দলুইয়ের সঙ্গে সাংসদ দেবের বিবাদ জেলার রাজনীতিতে সর্বজনবিদিত। তাদের গোষ্ঠীর নেতাদের উদ্দেশেই বৈঠকে মমতা কড়া কথা শুনিয়েছেন।
সূত্রের খবর, বৈঠকে মমতা বলেন, ‘‘দেব আমাদের দলের সম্পদ। বেশকিছু নেতা তাঁর সঙ্গে এমন আচারণ করেছে, যার ফলে ওঁর অসুবিধা হচ্ছে। এমনটা কেন হবে? ও শিল্পী মানুষ। এটা তোমরা কী করছ?’’ মুখ্যমন্ত্রী এমন কথা বলায় স্বাভাবিক ভাবেই দেব বিরোধী নেতারাই বৈঠকে খানিকটা চাপে পড়েছেন। দেবের পাশে দাঁড়িয়ে জেলা নেতাদের প্রতি মমতার এমন রুষ্ট হওয়ার ঘটনাতেই লোকসভা ভোটে তাঁর প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত পেয়েছেন উপস্থিত নেতারা। বৈঠক শেষে ঘাটালের এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘দেব প্রার্থী হলে আমাদের সুবিধাই হবে। প্রথমত দেব জনপ্রিয় নায়ক, দ্বিতীয়ত, দু’বারের সাংসদ। তাই ও প্রার্থী হলে আমাদের সুবিধা হবে।’’
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে ঘাটালে বাংলার সিনেমার সুপারস্টার দেবকে প্রার্থী করে চমক দেন মমতা। প্রথমবার ভোটের দাঁড়িয়ে বামফ্রন্টের সিপিআই প্রার্থী সন্তোষ রানাকে পরাজিত করে সাংসদ হন তিনি। ২০১৯ সালে প্রাক্তন আইপিএস তথা বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষকে হারিয়ে দ্বিতীয়বার জয়ী হন দেব। কিন্তু ঘাটাল থেকে মাঝে মধ্যেই দেবের সঙ্গে জেলা নেতৃত্বের বিবাদের খবর প্রকাশ্যে আসে। তাই এ বার লোকসভা ভোটের অনেক আগেই ফের নির্বাচনে না দাঁড়ানোর ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন তিনি। কিন্তু মমতা বৈঠকে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে যে ভাবে বিরোধী গোষ্ঠীর নেতাদের প্রশ্নের মুখে ফেলেছেন, তাতে আবারও ঘাটাল লোকসভা তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে তাঁকে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে।
অন্যদিকে, ২০১৯ সালে দেবের সঙ্গেই আরও দুই অভিনেত্রী তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়ে জয়ী হন। যাদবপুরে মিমি চক্রবর্তী ও বসিরহাট থেকে সাংসদ হয়েছেন নুসরত জাহান। তাঁরা কি ফের ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী হবেন? দেবের বিষয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়ার পর প্রশ্ন উঠছে তাঁদের নিয়েও।