ফাইল চিত্র।
সরাসরি নাম করেননি। কিন্তু রাজ্যে সফররত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-কে কার্যত বিঁধেই বৃহস্পতিবার রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার হয়ে সওয়াল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার কথায়, ‘‘১১ কোটির রাজ্যে পাঁচটা ঘটনা ঘটলে নিন্দা করুন! কিন্তু সবার গায়ে কালি লাগাবেন না। যদি কেউ বলে বাংলায় যেও না, বাংলা খারাপ, আমার গায়ে লাগে। বাংলা ইজ বেটার দ্যান এনি আদার স্টেট।’’ প্রসঙ্গত, বাংলায় তাঁর প্রাণসংশয় হতে পারত বলে খাস সংসদেই অমিত শাহ মন্তব্য করেছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রী নেতাজি ইন্ডোরের অনুষ্ঠানে এ দিন বার বার উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের কথা বলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ইউপি-তে বিচার চাইতে গেলে ওখানকার পুলিশ তাকেই
শাস্তি দেয়। এখানে সেই সাহস আশা করি, কারও নেই। রং না দেখে আমরা ব্যবস্থা নিই।’’
এ দিন সিপিএম, বিজেপি এবং মিডিয়াকেও নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আমি এখনও মনে করি, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকা উচিত। কিন্তু এটা বিশ্বাস করি না বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ফোন করে বলে দেবে এই খবরটা দেখাও!’’ সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কয়েকটা চ্যানেল ভাবে খুন, বাজে কাজ দেখালে লোকে বেশি দেখবে। এতে ছোটদের মনে প্রভাব পড়ছে। মা-বোনেরা নাটক, গান শুনুন। মিথ্যে ভেজাল খবর দেখবেন না। আমরাও অনেকের খুঁত জানি! বলি না! আমরা ব্যবস্থা নিলে চ্যানেল, প্যানেল কেউ ছাড় পাবে না।’’
সিপিএমের উদ্দেশে বলেছেন, ৩৪ বছরে মানুষ থানায় যেতে পারত না। হলদি নদীতে লাশ ভাসত, নরকঙ্কালের মালা পরানো হতো। তারাই এখন ফের মোয়া খাওয়ার অপেক্ষায়।’’ সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘এখন তো পুলিশ শাসক দলের নেতাদের সুরক্ষা নেয়। সাধারণ মানুষের কোনও সুরাহাই হয় না!’’ বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যও বলেছেন, ‘‘রাজ্যে সর্বত্র সিবিআই তদন্তের দাবি। এই সরকার মানুষের পুরো আস্থা হারিয়েছে।’’ বিজেপি-র উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর আরও খোঁচা, ‘‘ওষুধ, গ্যাস, পেট্রলের দাম বাড়িয়ে দেশটাকে বিক্রি করে দিয়েছ! বাঘ আবার ইঁদুর হবে! পুনর্মুষিক ভব!’’ মানুষে মানুষে ভেদ ঘটিয়ে হিন্দু, মুসলিম, উত্তর, দক্ষিণ, পাহাড়, সমতল বিভাজনের রাজনীতিরও মমতা নিন্দা করেন।
রাজ্যে ভুয়ো অডিয়ো, ভিডিয়োয় নানা চক্রান্ত হচ্ছে বলে হুঁশিয়ার করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পুলিশ সব তদন্ত করেছে। মিথ্যে খবর ছড়ালেও শাস্তি হবে।’’