পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হলেও, স্পিকারকে কিছুই জানায়নি ইডি। ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (ইডি)। কিন্তু তা সত্ত্বেও, সে কথা জানানো হয়নি বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বুধবার এ প্রসঙ্গে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। এ ভাবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি পরিষদীয় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন বারুইপুর পশ্চিমের তিন বারের বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘বিধানসভাকে খাটো করে দেখার প্রবণতা তৈরি হচ্ছে, সেটা মারাত্মক। পরিষদীয় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে লঙ্ঘন করা হচ্ছে।’’ বিধানসভার কোনও সদস্যের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হচ্ছে, অথচ স্পিকারকে কিছুই জানানো হচ্ছে না, সে বিষয়টি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিমান। প্রসঙ্গত, বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক হিসাবে পার্থ বিধানসভার সদস্য।
ইডিকে তাঁদের দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে স্পিকার বলেন, ‘‘কোনও বিধায়কের ক্ষেত্রে চার্জশিট দিতে গেলে স্পিকারকে জানাতেই হয়। কিন্তু এখনও তেমনটা করা হয়নি।’’ প্রসঙ্গত, ২৩ জুলাই পার্থকে গ্রেফতারির পর ১৭২ পাতার সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটের সঙ্গে ১৪,৬৪৩টি ‘বিশ্বাসযোগ্য’ নথি পেশ করেছে ইডি। যা নিয়ে অন্ধকারে বিধানসভা, এমনটাই দাবি স্পিকারের। এ ভাবে বিধানসভার স্পিকারকে অন্ধকারে রেখে কাজ করাতেই ইডির ওপর ক্ষুব্ধ স্পিকার বিমান। প্রথম বার ২০২১ সালের মে মাসে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অধুনাপ্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়, কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র ও প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে সিবিআই। নারদ তদন্ত মামলায় এঁদেরকে হেফাজতে নেয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সে বার স্পিকারের অনুমতির বদলে তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের অনুমতিকেই হাতিয়ার করা হয়েছিল। সে বার প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দিয়ে স্পিকার বলেছিলেন, ‘‘মন্ত্রী বিধায়কদের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে কিছুই জানানো হয়নি।’’ ২৩ জুলাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের সময় নাম মাত্র চিঠি দিয়ে স্পিকারের দফতরকে জানিয়েছিল ইডি।
উল্লেখ্য, পুজোর আগে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় যে অধিবেশন বসেছিল, তাতে সরকারের তরফে সিবিআই ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (ইডি)-সহ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে নিন্দাপ্রস্তাব আনা হয়েছিল। পাশাপাশি, গত বছর বিধানসভাতেই সিবিআই ও ইডির আধিকারিকদের তলব করেছিলেন স্পিকার। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। হাজিরা দেওয়ার বদলে, ওই দুই তদন্তকারী সংস্থাই চিঠি দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছিল। তাই পারস্পরিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে বলেই মত বাংলার রাজনীতির কারবারিদের।