ডেঙ্গির চরিত্র বদল নিয়ে চিন্তায় পুরসভা।
চরিত্র বদলে যাচ্ছে ডেঙ্গির। বদল এসেছে উপসর্গেও। শুধু তাই নয়, এখন আর রক্তে প্লেটলেটের মাত্রা কমছে না। কিন্তু অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসকদের পাশাপাশি উদ্বেগে পুরসভাও। শুক্রবার এমনটা জানিয়েছেন কলকাতা পুরনিগমের মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
নতুন উপসর্গের পাশাপাশি চিন্তা বাড়িয়েছে ডেঙ্গির ডেন-থ্রি প্রজাতিও। বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, ডেঙ্গির এই বাড়বাড়ন্তের নেপথ্যে রয়েছে ডেন-থ্রি। কলকাতার ৫০ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের নমুনা সেরো-পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল ফুলবাগানের আইসিএমআর-নাইসেডে। তাঁদের মধ্যে ৩৫ জনের শরীরেই মিলেছে ডেন-থ্রি প্রজাতি।
ওই রিপোর্ট দেখে চিন্তা বেড়েছে পুরসভার। শুক্রবার মেয়র বলেন, ‘‘ডেঙ্গির চরিত্র বদল হয়েছে। কোভিডের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছে। না হলে হঠাৎ অক্সিজেন লেভেল কম হচ্ছে কেন? প্লেটলেট কমে যায় ডেঙ্গিতে। প্লেটলেট দিলে আবার তা বেড়ে যায়। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, অক্সিজেনের মাত্রাও কমে যাচ্ছে। একটি বাচ্চাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। তার অক্সিজেন লেভেল কমে যাচ্ছে।’’
ফিরহাদের দাবি, শুধু কলকাতা নয়, সিঙ্গাপুরের মতো আধুনিক শহরেও ডেঙ্গি হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘সিঙ্গাপুরের মতো আধুনিক শহরে পাঁচ হাজার ডেঙ্গি সংক্রমণ হত। এ বছর সেখানে ৩৭ হাজার জনের ডেঙ্গি হয়েছে। সেই তুলনায় কলকাতায় ডেঙ্গির প্রকোপ কম। তবে বসে থাকলে হবে না। তাই সবাই পথে নেমেছি। পুরসভা পথে নেমেছে। বালি, হাওড়া, উত্তরপাড়া, রাজপুর, সোনারপুর, ব্যারাকপুর— সব পুরসভাকেই সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। পরিদর্শনের জন্য দল নামানো হয়েছে। তারা দেখছে, কোথায় জল জমেছে, নর্দমা কোথায় পরিষ্কার হয়নি। যদিও ডেঙ্গির লার্ভা নর্দমার জলে জন্মায় না। পরিষ্কার জলে জন্মায়। বাড়ির টবের জলে।’’
ডেন-থ্রি প্রজাতির মোকাবিলায় উদ্বেগে রয়েছে পুরসভাও। ফিরহাদ বলেন, ‘‘ডেন-থ্রি প্রজাতির সংক্রমণ সিঙ্গাপুরে হয়েছে। এ দেশে হয়নি। তাই ডেন-থ্রি সংক্রমণে কী প্রোটোকল মানা উচিত, তা এ দেশে বলা নেই। কেন্দ্রীয় সরকারকে সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসার প্রোটোকল নিয়ে এসে রাজ্যগুলিকে দিতে হবে। আমরা ইতিমধ্যে এটা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রককে জানিয়েছি।’’
বৃহস্পতিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছিল, চলতি সপ্তাহে রাজ্যে ডেঙ্গিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৭৯৮ জন। রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১১ হাজারের কাছাকাছি। আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি উত্তর ২৪ পরগনায়। সেখানে চলতি সপ্তাহে আক্রান্ত হয়েছেন ৬১৮ জন।