অন্ধকারে ‘তারা’দের হাতড়ে বাংলায় জ্বলে উঠতে চাইছে বিজেপি।
আজ সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দলের বৈঠকের আগেই বেনজির ভাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও প্রাক্তন টিভি-তারকা স্মৃতি ইরানিকে দিয়ে দল ঘোষণা করল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভবানীপুর কেন্দ্রে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পরিবারের সদস্য চন্দ্র কুমার বসুকে প্রার্থী করছে বিজেপি। রাতে যে ৫২ জন প্রার্থীকে চূড়ান্ত করেছে দল, তাতে অভিনেতা লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ময়ূরেশ্বর থেকে ও প্রাক্তন ফুটবল খেলোয়াড় ষষ্ঠী দুলে প্রার্থী হচ্ছেন ধনিয়াখালি থেকে। রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম নিয়েও বিবেচনা হয়েছে। কিন্তু তাঁর আসন এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আর এর পাশাপাশিই ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে প্রার্থী করা নিয়েও দলের নেতাদের আলোচনা চলছে। কিন্তু এখনও সেটি আগের বারের মতই দানা পাকেনি।
কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির বাংলায় এই তারাদের সন্ধানে নামতে হচ্ছে কেন?
দলের সূত্রের মতে, পশ্চিমবঙ্গে এখন যা রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভিত একটু নড়বড়ে হলেও মজবুত অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু তার বিরোধী পরিসরটি বিজেপি নেওয়ার একটি সুযোগ যে বছর খানেক আগেও তৈরি হয়েছিল, তা এখন অস্তমিত। কংগ্রেস ও বামেদের জোট বিজেপির পরিসরটি আরও খাটো করে দিয়েছে। রাজ্যে দলের সংগঠনের অবস্থা এখনও এতটা শক্তিশালী নয়, যে বিজেপি প্রধান বিরোধী দলের অবস্থাটি এখন দখল করার কথা ভাবতে পারে। দলের মধ্যেও এমন কোনও মুখ নেই, যাঁকে সামনে রেখে দল সেই উচ্চতায় পৌঁছে পারে। এই অবস্থায় শেষ বাজারে হাওয়া তুলতে তারাদের উপরেই ভরসা রাখছে দল।
বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, দিল্লিতে শেষ বাজারে যে ভাবে কিরণ বেদীকে বাইরে থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল, আজও সে ধরণের একটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। জানুয়ারি মাসেই হাওড়ায় অমিত শাহের সভায় যোগ দেওয়া নেতাজি পরিবারের চন্দ্র কুমার বসুকে আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। দল আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কাউকে মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী পশ্চিমবঙ্গে ঘোষণা করা হবে না। কিন্তু চন্দ্র কুমার বসুকে সামনে রেখে এবং তাঁর নাম বেনজির ভাবে ঘোষণা করে বিজেপি নেতৃত্ব আজ বুঝিয়ে দিলেন, তিনিই বিজেপির অঘোষিত মুখ।
আরও পড়ুন- জনদরদি প্রমাণ দিতে পিএফ সেই করমুক্তই
নাম ঘোষণার পর চন্দ্র কুমার বসু আজ দিল্লিতে বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের পরিবর্তনের কথা বলে ক্ষমতায় এসেছিলেন। কিন্তু আসল পরিবর্থন হল কি? এ তো বামেদের ৩৪ বছরেরই সম্প্রসারণ। রাজ্যে কোনও উন্নয়ন হয়নি। আইন-শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে। শিক্ষার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সবদিক থেকেই রাজ্যের আরও ক্ষতি হয়েছে।’’ নেতাজি পরিবারের আর সদস্য ও তৃণমূলের সাংসদ সুগত বসু অবশ্য বলেন, ‘‘চন্দ্র কুমার বসু বিজেপির প্রার্থী হলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই জয় হবে।’’
বিজেপি নেতারা আজ দার্জিলিংয়ের তিনটি আসনে লড়ার জন্য মোর্চার নেতাদেরও দিল্লিতে ডেকে পাঠান। বিজেপি চাইছে, সেখানে বিজেপিরই প্রতীকে মোর্চার নেতারা প্রার্থী হন। তা নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। ১৫ তারিখের মধ্যে পুরো তালিকা ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা।জনদরদি প্রমাণ দিতে পিএফ সেই করমুক্তই