অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ফাইল চিত্র।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বকেয়া টাকার ৯৯ শতাংশই রাজ্য সরকার দিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। বেসরকারি হাসপাতালের প্রাপ্য এবং তার জেরে রোগী ফেরানোর দুই সমস্যা সমাধানে সরকারের সাফল্য দাবি করেছেন তিনি।
বিধানসভায় বাজেট বিতর্কে রাজ্যের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিয়ে চর্চায় নানা সরকারি প্রকল্প নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। শুক্রবার তার জবাব দিয়েই চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথীতে (বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের প্রাপ্য) ৯৯ শতাংশ অর্থই দিয়ে দিয়েছে।’’ শুধু তাই নয়, সেই সঙ্গে এই প্রকল্পের সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকার যে কঠোর অবস্থান নিয়েছে তা বুঝিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘‘সম্প্রতি ১৭টি জায়গায় রোগী ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ এসেছিল। তার মধ্যে ১৪টি ক্ষেত্রে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে রোগীকে যেখান থেকে ফেরানো হয়েছিল, সেখানেই ভর্তি করা হয়েছে।’’
এ বারের বাজেট বিতর্কে অংশ নিয়ে রাজ্য সরকারের কথা ও কাজে ফারাকের অভিযোগে সরব হন বিজেপি বিধায়কেরা। বালুরঘাটের বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ীর অভিযোগ ছিল, এ সরকার ঘোষণার সরকার হয়ে উঠেছে। তার জবাবে চন্দ্রিমা এ দিন বলেন, ‘‘সরকারকে তো ঘোষণা করতেই হয়। তবে ঘোষণার পর তা থেকে পালিয়ে যায়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।’’ সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি আর অনিয়ম নিয়ে সরব হন বিজেপির আরও দুই বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল এবং বিশ্বনাথ কারক।
এ দিনের বিতর্কে অর্থ দফতরের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে কিছুটা কটাক্ষের সুর ছিল বিজেপির মিহির গোস্বামীর। তিনি পূর্ণমন্ত্রী নন, সে দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন কোচবিহারের মিহির। তা নিয়ে কিছুটা উত্তপ্ত হয় সভা। জবাবে চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘আমরা মায়েরা সকলকে গর্ভে ধারণ করি। কেউ এই রকম অমানুষ হয়ে যাবে, তা ভাবতে পারি না।’’ বাজেট বিতর্কে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অনুপস্থিতি নিয়ে চন্দ্রিমার মন্তব্য, ‘‘কখনও দেখিনি, বাজেট আলোচনায় বিরোধী দলনেতা অংশ নেন না! আমাদের বিরোধী দলনেতা এত প্রতিভার অধিকারী অথচ তাঁকে বাজেট আলোচনার দু’দিন দেখলাম না।’’ বক্তৃতায় উত্তরবঙ্গের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ করে বিজেপির মিহির বলেন, ‘‘চলুন, আমরা উত্তরঙ্গের দাবি নিয়ে একসঙ্গে দিল্লিতে দরবার করতে রাজি।’’ বিরোধী শিবিরের এই প্রস্তাবকে ‘ছলনা’ বলে উল্লেখ করেছেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে সরকারের দেওয়া প্রস্তাব বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু যে ফিরিয়ে দিয়েছেন, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। শোভনদেব বলেন, ‘‘মুখে ‘ভারত মাতার জয়’ স্লোগান দিচ্ছে আর রেল, বিএসএনএলের মতো মায়ের (দেশের) অলঙ্কার বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে!’’
তৃণমূল কংগ্রেসের আমলে রাজ্যের ঋণ বৃদ্ধির প্রসঙ্গ তুলে বিজেপির অম্বিকা রায় বলেন, ‘‘এই যে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেওয়া হচ্ছে তা কী ভাবে শোধ করা হবে, সে সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট রাস্তা দেখানো নেই বাজেট প্রস্তাবে।’’ বিজেপির এই উদ্বেগ নিয়ে কটাক্ষ করে তৃণমূলের রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধৃত করে দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘ওরে ভীরু তোমার হাতে নাই ভুবনের ভার। হালের কাছে মাঝি আছে, করবে তরি পার।’’